নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশে চাকরি নিতে কোন তদবির লাগেনা, টাকা দিতে হয়না। পুলিশে চাকরি প্রার্থীদেরকে এখন অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সৎ, সাহসী, সেবাদান ও দেশের জন্য যে কোন চ্যালেঞ্জ নিতে আগ্রহীদেরকে পুলিশ খুঁজছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার)।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত দেশের চ্যালেঞ্জ নিতে পুলিশ বিভাগকেও সে অনুযায়ী গড়ে তোলা হচ্ছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
নতুন নিয়মে বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ (“চাকরি নয় সেবা”) সংক্রান্তে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন নিয়মে কনস্টেবল পদে চাকরির নিয়মাবলী স্লাইড শোর মাধ্যমে উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকার। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ নূরে আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অনির্বাণ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া কনস্টেবল পদে অনলাইনে আবেদনপত্র ৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। আবেদনের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়, আবেদন ফরম পূরণ করার পর যোগ্য প্রার্থীরা একটি ইউজার আইডি পাবেন। পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে উক্ত ইউজার আইডি ব্যবহার করে টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল থেকে সার্ভিস চার্জ বাবদ ৩০ টাকা জমা দিতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার সময় প্রার্থীর স্বাক্ষর (৩০০ বাই ৮০ পিক্সেল) ও রঙিন ছবি (৩০০ বাই ৩০০ পিক্সেল) স্ক্যান করে নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করতে হবে। ইউজার আইডি পাওয়ার পর কমপক্ষে ৩০ টাকা আছে এমন একটি টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল থেকে দুটি এসএমএস করতে হবে।
প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের জন্য শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে রাখতে হবে। বাছাইকৃত প্রার্থীদের মোবাইল নম্বরে নির্বাচিত হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের নিজ জেলার পুলিশ লাইন্স ময়দানে নির্ধারিত তারিখে সকাল ৯টায় শারীরিক মাপ ও পরীক্ষার জন্য উপস্থিত হতে হবে। প্রার্থীকে শারীরিক যোগ্যতার পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা জিপিএ ২.৫ সহ এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বয়স হতে হবে চলতি বছরের ৭ অক্টোবরে ১৮ থেকে ২০ বছর। বাছাইকৃত প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও (দৌড়, লং জাম্প, হাই জাম্প, পুশ আপ, ড্রাগিং, রোপ ক্লাইমিং ইত্যাদি) ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে হবে।
শারীরিক মাপ ও অন্যান্য টেস্টে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞানের ওপর ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
প্রতি জেলায় নিয়োগযোগ্য প্রকৃত শূন্য পদে কোটার অনুকূলে সরকার কর্তৃক জারীকৃত বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিজ জেলার পুলিশ সুপার কর্তৃক নির্ধারিত স্থান, তারিখ ও সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীরা পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ করবেন। ভেরিফিকেশন সন্তোষজনক হলে প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হবে।
প্রাথিমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগদানের পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত পুনর্বাছাই কমিটি কর্তৃক শারীরিক যোগ্যতাসহ অন্যান্য তথ্যাদি যাচাইয়ের পর চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কিশোরগঞ্জ জেলায় ৬১ শূন্য পদে কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এরমধ্যে পুরুষ ৫২ জন ও নারী ৯ জন।
নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনে জড়িতদের গ্রেফতার ও তার নিয়োগ বাতিল করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।