নিউজ একুশে ডেস্ক: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের শহীদুল্লাহ ফকিরকে (৭২) গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার কালীবাড়ি সড়ক থেকে ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) শাওন চক্রবর্তী তাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেতারের পর বিকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শহীদুল্লাহ ফকির ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার কাকনহাটি এলাকার প্রয়াত মৌলভী কমর উদ্দিন ফকিরের ছেলে। তিনি ঢাকার বনানী এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল শিক্ষকপল্লী এলাকার বাসিন্দা এ. বি মহিউদ্দিনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগটি তদন্ত করছে ট্রাইব্যুনাল। এ. বি মহিউদ্দিন ১৯৭১ সালে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম. আতাউর রহমান বিপিএম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিশোরগঞ্জের এ. বি মহিউদ্দিন হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করা হবে। মহিউদ্দিন হত্যাকাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন বলে তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে বলে এই কর্মকর্তা জানান।
এদিকে শহীদ এ. বি মহিউদ্দিনের মেয়ে ওয়াহিদা খাতুন নিউজ একুশেকে জানান, ১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ শহরের কাচারি বাজার থেকে আলবদররা তার পিতাকে ধরে নিয়ে যায়। তিনজন আলবদর তাকে ধরে নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী তাদের পাশের বাসার কাজল নামে এক কিশোর গিয়ে তাদেরকে জানিয়েছিল। ওয়াহিদা খাতুন আরও জানান, তার পিতাকে ধরে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশন সংলগ্ন ডাক বাংলোয় নেওয়া হয়। বিকালে তাদের স্বজনরা ডাকবাংলোর বারান্দায় তাকে ওজু করতে দেখেছেন। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ মিলেনি। তাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছিল বলে পরিবারের সদস্যদের ধারণা। ধরে নেওয়ার পর প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জায়গায় তার লাশ খুঁজেছেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু কোথাও খোঁজ মিলেনি তার।
ওয়াহিদা খাতুন তার পিতা হত্যার সাথে জড়িত সকলকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।