নিজস্ব প্রতিবেদক: হেলিকপ্টারে চড়ে ফসলি জমিতে নামলেন এক চেয়ারম্যান প্রার্থী। এলাকায় এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নে।
মঙ্গলবার দুপুরে হেলিকপ্টারে চরে উপজেলার কাটখাল বাজারের পাশে ফসলি জমিতে নামেন বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ও তার কয়েকজন আত্মীয়। এ সময় হেলিকপ্টার দেখতে সেখানে জড়ো হয় হাজারো উৎসুক জনতা। তাকে স্বাগত জানাতে কর্মী সমর্থকরা স্লোগানও দেন। এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
হেলিকপ্টার নামার আগে থেকেই ফেসবুকে সরাসরি লাইভ দেন চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের বন্ধু গাজী আবুল হোসাইন। লাইভে তাকে তাজুল ভাই, তাজুল ভাই বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। তার সাথে তাল মিলিয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে আরও অনেককেই।
ভিডিওতে দেখা যায়, হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে একটি ফসলি জমিতে। হেলিকপ্টারটি দেখতে ছুটে আসেন বিভিন্ন বয়সী হাজারো নারী-পুরুষ। আর জমির ফসল রক্ষার্থে উৎসুক জনতাকে সরাতে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছেন কয়েকজন ব্যক্তি।
স্থানীয়রা এটিকে নির্বাচনী মহড়া হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি কাটখাল ইউনিয়নসহ জেলার তিনটি উপজেলাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসা তার ফুফুর পরিবারকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসেন এলাকায়।
এদিকে হেলিকপ্টার থেকে চেয়ারম্যান তার ফুফুর পরিবারকে নিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে দাঁড়িয়েই ফসলি জমি নষ্ট করার অভিযোগ করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন ছাইদুল ইসলাম নামে এক যুবক। সেই ভিডিওটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এ বিষয়ে ছাইদুলকে ফোনে না পেয়ে কথা হয় তার বাবা আবদুল মালেকের সাথে। তিনি বলেন, হেলিকপ্টার নামার সময় মানুষের ভিড়ে আমার জমির ক্ষতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের জন্য আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কোন আপত্তি নাই। আমার জমির ক্ষতি হওয়ার পরে চেয়ারম্যান নিজে আমার বাড়িতে এসেছেন, এতেই আমি খুশি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, আমেরিকা থেকে আমার ফুফু, ফুফা আর ফুফাতো বোন অনেকদিন পর দেশে এসেছেন। তাদেরকে স্বাগত জানাতে আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে আমি তাদের সাথে এসেছি। তিনি আরও বলেন, গ্রামের মধ্যে হেলিকপ্টার এসেছে শুনে অনেকেই দেখতে এসেছেন। এ কারণে ভিড় জমে একজন কৃষকের ফসলি জমি ক্ষতি হয়েছে। আমি তার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পরে এভাবে এলাকায় আসাটা আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে নির্বাচনী প্রচারণার কোন উদ্দেশ্য আমার ছিল না। তিনি আরও বলেন, এটা যেহেতু গ্রাম অঞ্চল, তাই হেলিকপ্টার আসলে লোকজন তো খানিকটা ভিড় করবেই।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।