নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি কাজে সহযোগিতা করতে গিয়ে আটক হন এক চারুশিল্পী। পরে তদবিরে মুক্তি পান তিনি। তবে সাড়ে তিন ঘন্টা তাকে থানা হাজতে কাটাতে হয়েছে। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার।
নিকলী উপজেলার মোহরকোণা গ্রামের ছেনু মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান পেশায় একজন চারুশিল্পী। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের নির্দেশে সম্প্রতি তিনি স্থানীয় একটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’সেতুর পাশে ঝুঁকিপূর্ণ লেখা সংবলিত একটি ফলক স্থাপন করেন। তিনি জানান, ফলকটি স্থাপন করার পরই কে বা কারা ফলকের লেখাগুলো মুছে ফেলে। পরে তিনি পুনরায় লিখে দেন। তিনি অভিযোগ করেন, আইন মেনে স্থানীয় জনসাধারণের পণ্যবোঝাই গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকলেও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির ইটবোঝাই ট্রাক্টর প্রতিদিন অবাধে চলাচল করছে। উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইটবোঝাই ট্রাক্টর চলাচলে নিষেধ করেন তিনি। পরে ইউএনওর নির্দেশে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ভূঁইয়া জনি তদবির করলে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা পর থানা হাজত থেকে ছাড়া পান তিনি। থানা থেকে ছাড়া পেতেও তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বলে তিনি জানান।
সেতুর সিগন্যালম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত বৃদ্ধ আছির উদ্দিন জানান, ইটবোঝাই ট্রাক্টর যখন চলে, তখন সেতুটি কাঁপতে থাকে। সেতুর মাঝখানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনিও সে সময় ভয়ে গুটিয়ে যান।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইমরুল হাসান বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য তিনি তার নিজ ইটভাটা থেকে ইট সরবরাহ করছেন। এতে ইউএনওর সম্মতি রয়েছে।
জনসাধারণের জন্য ঝুকিপূর্ণ হলেও ছাত্রলীগ নেতার ইটবোঝাই ট্রাক্টর চলাচলে সেতুটি ঝুঁকিমুক্ত কি না, এমন প্রশ্নে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল গণি বলেন, সেতুটি সকলের জন্যই ঝুকিপূর্ণ। সরকারি কাজে সহযোগিতা করার পরও হাবিবুর রহমানকে আটক করার ঘটনাটি দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু হাসান তার নির্দেশে হাবিবুর রহমানকে আটক করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের জন্য সেতুর উপর দিয়ে সীমিত আকারে ইট নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। সরকারি কাজে সহযোগিতা করার পরও হাবিবুর রহমানকে আটক করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা এক্ষেত্রে স্বাধীন। নিউজ করলে করতে পারেন।’
উল্লেখ্য, নিকলী উপজেলার মোহরকোণা-দামপাড়া-কামালপুরে যাতায়াতের জন্য নরসুন্দা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি বেশ কিছুদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী।