নিজস্ব প্রতিবেদক: বাই সাইকেল চালানোর সখ ছিল অনেক আগে থেকেই। চালানো শিখেছিও কিছুদিন আগে। কিন্তু নিজের সাইকেল না থাকায় কোন সময় হেঁটে, আবার কোন সময় রিকসায় স্কুলে যাই। তাছাড়া রিকসা ভাড়াও অনেক বেশি। এবার সরকারিভাবে সাইকেল পাওয়ায় আমার খুবই আনন্দ লাগছে। সাইকেল চালাতে প্রথমে ভয় লাগতো। এখন ভয়কে জয় করে এগিয়ে যাব।
কিশোরগঞ্জে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের অর্থায়নে একটি বাই সাইকেল পেয়ে কিশোরগঞ্জ সদরের উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শাহরিয়া জাহান মিশু আনন্দে আত্মহারা হয়ে এমন কথাগুলো বলেছেন।
লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএসপি-৩) প্রকল্পের অর্থায়নে শিক্ষাবান্ধব কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জ জেলার ১০৮ টি ইউনিয়নের ৭৪৮ জন মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীর মাঝে বাই সাইকেল বিতরণ করা হয়।
সদর উপজেলার জিয়াউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী তারিন হক প্রীতি বলেন, মেয়ে বলে পরিচিত অনেকেই সাইকেল চালানো পছন্দ করেননা। বাবা মায়ের উৎসাহে সাইকেল চালানো শিখেছি। কিন্তু নিজের সাইকেল নেই। এবার সরকারিভাবে সাইকেল পাওয়ায় খুবই ভালো লাগছে। এখন প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাব। বাই সাইকেল পেয়ে তাদের মত সবাই আনন্দিত। অভিভাবকরাও সরকারের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা আক্তার, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন ও লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টিতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
বাই সাইকেল প্রাপ্তদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের ৭৫ জন মেয়ে, নিকলী উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ৫১ জন মেয়ে, হোসেনপুর উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ৩২ জন মেয়ে, মিঠামইন উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ৩৭ জন মেয়ে, ইটনা উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের ৫১ জন মেয়ে, অষ্টগ্রাম উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের ৫৭ জন মেয়ে, বাজিতপুর উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের ১৬ জন ছেলে ও ৪৪ জন মেয়ে, কটিয়াদী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের ২১ জন ছেলে ও ৫৪ জন মেয়ে, কুলিয়ারচর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ৫ জন ছেলে ও ৪০ জন মেয়ে, তাড়াইল উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ৩১ জন ছেলে ও ২৪ জন মেয়ে, ভৈরব উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ২৫ জন ছেলে ও ২৮ জন মেয়ে, পাকুন্দিয়া উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের ২৭ জন ছেলে ও ৪৫ জন মেয়ে এবং করিমগঞ্জ উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের ৮৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থী।
এতে মোট ৮৯ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।