নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা সমন্বিত তালিকা থেকে ‘চিহ্নিত চার রাজাকারের’ নাম বাতিল, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বিলুপ্ত ও অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাবেক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এবং ২০১৭ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য ভূপাল চন্দ্র নন্দী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ গ্রামের মো. রফিক, পাড়া পরমানন্দ গ্রামের মো. মহরম আলী মোল্লা, জালুয়াপাড়া গ্রামের মো. আজিম উদ্দিন ও নীলগঞ্জ গ্রামের মৃত সুলতান আহম্মদ সেনা এ চারজন চিহ্নিত রাজাকার। তাদের মধ্যে পাড়া পরমানন্দ গ্রামের মহরম আলী মোল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা আজিম উদ্দিন দারোগার গ্রুপের কাছে আত্মসমর্পন করেছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিনের গ্রুপ জালুয়াপাড়া গ্রামের আজিম উদ্দিনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, যাচাই বাছাইয়ের সময় উপযুক্ত প্রমাণসহ জামুকা ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে এ চারজনের বিষয়ে কাগজ পাঠানো হলেও তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত করা হয়। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তারা বলেন, এতে করে মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননা করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক কমান্ডার ভূপাল নন্দী বলেন, জামুকার প্রতি এখন আর মুক্তিযোদ্ধাদের কোন আস্থা নেই। জামুকাকে তিনি “জাল মুক্তিযোদ্ধা তৈরির কারখানা” হিসেবে আখ্যায়িত করে অবিলম্বে জামুকাকে বিলুপ্ত করার দাবি জানান। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনেরও দাবি জানানো হয়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেদেরকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন পাড়া পরমানন্দ গ্রামের মো. মহরম আলী মোল্লা ও রশিদাবাদ গ্রামের মো. রফিক। তারা বলেন, তাদের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় এমন অভিযোগ এনেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এ. বি সিদ্দিক, সদর উপজেলা কমান্ডের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার আজিম উদ্দিন, সাবেক সহকারী কমান্ডার নূরুল হক, জয়নাল আবেদীন, মনিন্দ্র চন্দ্র সরকার, শামছুজ্জামান, নজরুল ইসলাম, মতিউল ইসলাম, হাসিদুর রহমান, হাবিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান মুক্তু, মতিউর রহমান, আব্দুল হাই, হাবিবুর রহমান বুলবুল, রুকুন উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত চারজনের ভাতা বন্ধ রয়েছে।