নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির মহাসচিব কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা জানিনা আগামী নির্বাচন নিয়ে কী হবে। আমরা চাই ভালো কিছু হোক। কিন্তু বড় দুটি দলের একদফার কারণে কোনো সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় কিনা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় কিনা, যদি অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে তৃতীয় কোনো পক্ষ সুযোগ নেয় কিনা, গণতন্ত্র ব্যাহত হয় কিনা। এ বিষয়ে আমরা ভয় পাচ্ছি, আতংকে আছি।
তিনি বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা এলাকায় স্থানীয় জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সভায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা চাইনা গণতন্ত্র ব্যাহত হোক। আমরা চাই সংবিধান সমুন্নত থাকুক। আমরা চাই গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা যেন বহাল থাকে। সেজন্য সরকারের দায়িত্ব বেশি। সরকারের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, সরকার যেন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে একটেবিলে আসার অনুরোধ করে, একটেবিলে বসার সুযোগ করে দিয়ে একটা পথ বের করে। যে পথ দিয়ে আমরা সবাই মোটামুটিভাবে সন্তুষ্ট হয়ে একটা সিস্টেমে নির্বাচনটা যেন করতে পারি। জনগণের ভোটের অধিকার যেন প্রয়োগ হয় তার ব্যবস্থা করতে পারি।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা এক দফা চান। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে বাড়লো, তার জন্য তো আপনারা একদফা করেননা। দেশে যে লক্ষ লক্ষ বেকার, শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য কী করা যায়, সেটা তো আপনারা মনে করেননা। কর্মবিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে কর্মমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর জন্য আপনারা তো কেউ কথা বলেননা। বলেননা কারণ, শুধু ক্ষমতাই আপনাদের টার্গেট। আমরা বলি, শুধু ক্ষমতায় গেলেই হবেনা, জনগণের কথাও চিন্তা করতে হবে।
মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, বড় দুটি দল পালাক্রমে ৩২ বছর যাবত ক্ষমতায় আছে, অথচ নির্বাচনটা কোন প্রক্রিয়ায় হবে, আজ পর্যন্ত এটার বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারলোনা। দফা বাদ দিয়ে এক টেবিলে বসার অনুরোধ করে তিনি বলেন, জেদাজেদি বাদ দিয়ে জনগণকে ভয়ের মধ্যে না রেখে, একদফা একদফা করে সংঘাতময় অবস্থায় না গিয়ে আসুন সবাই মিলে এক টেবিলে বসে আলোচনা করি। সুষ্ঠু নির্বাচন করার একটা পথ বের করি। কিন্তু কেউ কথা শুনেনা। ভালো কথা কারও মজা লাগেনা। সবাই আছে নিজেদের চিন্তায়। ওনারা যেহেতু কথা শুনেই না, আমরাও চিন্তা করলাম তিনশ আসনে প্রার্থী দেবো। বিএনপি-আওয়ামী লীগের বাইরে যদি জনগণ চায় আমরাও ক্ষমতায় যেতে পারি।
তবে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই দলই ভিতরে ভিতরে জাতীয় পার্টিকে জোটে যেতে আহ্বান করে। বিএনপি বলে কী চান, আলোচনায় আসেন। আর আওয়ামী লীগ বলে আমাদের সঙ্গে আসুন, নতুন করে ভালোবাসা হোক। অনেকেই জানতে চান, বিএনপি-আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করবেন কিনা, কিংবা জোট হবে কিনা। আমরা বলি, জোট তো আমরা করতে চাইনা। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই আমাদের সঙ্গে জোট করতে চায়। কারণ তাদের আত্মবিশ্বাস নেই যে, এককভাবে ক্ষমতায় যেতে পারবে। আমরাও বলেছি, নির্বাচন আসুক, দেশের অবস্থা বুঝে, মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝে জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবো নির্বাচনে কিভাবে যাবো।
নিজ নির্বাচনী এলাকায় (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) নৌকা প্রতীক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার এলাকায় আওয়ামী লীগের অনেকেই নৌকা চান। যে কেউ চাইতেই পারেন। কিন্ত আওয়ামী লীগ করিমগঞ্জ-তাড়াইলে নৌকা দিবেনা। তারা আমাকে চায়। জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিতে চায়। ওনাদের নেত্রী এই এলাকায় নৌকা না দিলে আমার কি করার আছে। তবে আমার আত্মবিশ্বাস আছে, ত্রিমুখি নির্বাচন হলে আমি খারাপ করবোনা। কারণ আমি পরীক্ষিত সৈনিক।