জাতীয় পর্যায়ের ৮ম বারের মতো শেখ রাসেল ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (বালক অনূর্ধ্ব–১৫)-২০২২ এর উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে ক্রীড়া পরিদপ্তরের সহযোগিতায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক কে. এম আলী রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ রাসেল ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ ক্রীড়া অঙ্গনের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী সংযোজন। এ বছরই প্রথমবারের মতো উপজেলা পর্যায়ের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যার কারণে গত বছরের তুলনায় চারগুণের বেশি খেলোয়াড় এতে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা উপজেলা পর্যায় থেকে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের নিয়ে জেলা পর্যায়ে এবং জেলা পর্যায় থেকে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের নিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে আবাসিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন করেছি। আমরা জাতীয় পর্যায়ে বাছাইকৃত সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে কক্সবাজারে বীচ ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো এবং তাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ক্রীড়াঙ্গনের প্রকৃত অভিভাবক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাকালেও অসহায় দুস্থ অস্বচ্ছল ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য জাতির পিতার নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে ৩০ কোটি টাকা সীডমানি দিয়েছেন। যার লভ্যাংশ হতে আমরা ক্রীড়াসেবীদের সহযোগিতা করছি।
তিনি উল্লেখ করেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ হাজারের অধিক ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আমরা প্রায় ৪ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছি। আরো ১০ হাজার ক্রীড়াবিদের মধ্যে ৫ কোটি টাকা অনুদান প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলসহ সকল খেলাধুলাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১ম পর্যায়ে ১২৫ টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছি। দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৮৬ টি মিনি স্টেডিয়ামের কাজ চলমান রয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ের ১৭৩ টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি। আমরা চেষ্টা করছি মাঠগুলো যেন সারা বছরই খেলার উপযোগী থাকে এবং তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। পর্যায়ক্রমে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়েও খেলার মাঠের উন্নয়ন করবো, যাতে তৃণমূল পর্যায়ে ছেলে মেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ পায়।
যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের মধ্যে ছোটোকালেই সততা, বিচক্ষণতা ও দেশপ্রেমের মতো বিরল গুণাবলী পরিলক্ষিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু সর্বদা শহীদ শেখ রাসেলকে কাছে কাছে রাখতেন। তিনি জাপান সফরেও তাকে সাথে রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অতি আদরের পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের নামে প্রথমবারের মতো ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালক (অনূর্ধ্ব–১৫) ২০২২ আয়োজন করতে পেরে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি।
তিনি আরো বলেন, দেশের ফুটবলের হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নানা উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা প্রতিবছরই জাতির পিতা গোল্ডকাপ ফুটবল বালক টুর্নামেন্ট (অনূর্ধ–১৭) ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা (অনূর্ধ–১৭) আয়োজন করছি।
জাতীয় পর্যায়ের এ টুর্নামেন্টে ৮ টি বিভাগীয় দল অংশগ্রহণ করছে। উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম বিভাগকে টাইব্রেকারে হারিয়েছে রাজশাহী বিভাগ। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র ছিল। একই দিনে আরো তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিভাগকে ১-০ গোলে হারিয়েছে সিলেট বিভাগ। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন সিলেট বিভাগের হাবিবুর রহমান। আরেক ম্যাচে ময়মনসিংহ বিভাগকে টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বরিশাল বিভাগ। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র ছিল। দিনের শেষ ম্যাচেও ভাগ্য নির্ধারণ হয় টাইব্রেকারে। রংপুর এবং খুলনা বিভাগের গোলশূন্য থাকা ম্যাচটি টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে খুলনা বিভাগ।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ক্রীড়া পরিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)