ঢাকাশনিবার , ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  1. – 99
  2. 1Win Brasil
  3. 1win Yüklə Android Apk Və Ios App 2023 əvəzsiz Indir Plant-based Products – 688
  4. 1xBet Azerbaycan Qeydiyyat Mobi AZ Yukle Elaqe Nomresi Benchmark Commercial Lending 157 – 233
  5. 1xBet giriş, güzgü 1 xBet Azərbaycanda rəsmi sayt – 673
  6. 1xbet Mobi Cihazlarınız Üzrə Mobil Tətbiqi Android Os Cihazlar üçün 1xbet Mobile Tətbiq – 186
  7. 1xbet Morocco
  8. casino
  9. Kazino Online Casino Official Site, Big Bonuses, Site Mirror, Casino Entrance, Payment Acceptance, Big Jackpot – 626
  10. mostbet apk
  11. mostbet az 90
  12. Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan Lap Yaxşı Bukmeyker Formal Saytı – 331
  13. mostbet azerbaijan
  14. mostbet kirish
  15. Mostbet Mobil Tətbiq: Azərbaycandan Olan Oyunçular üçün Icmal 2023 – 598
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হাওরে ভোরের আলো

প্রতিবেদক
-
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১ ১০:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন: পূব আকাশে সূর্য সবেমাত্র উঁকি দিয়েছে। কিরণ ছড়িয়েছে ভোরের আলো। হাওরযাত্রার প্রস্তুতির জন্য মোবাইল ফোনে চলছে ডাকাডাকি। তবে কেউ কেউ আগে থেকেই এসে হাজির। তদের অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হতে চাচ্ছেনা। কখন সবাই একত্রে মিলিত হবেন, তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা তাদের। সূর্যের প্রখরতা বাড়ার আগেই রওনা দিতে হবে স্বপ্নের হাওরের উদ্দেশ্যে।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য সংগঠন ভোরের আলো সাহিত্য আসরের এবারের সভার স্থান নির্ধারণ করা হয় হাওরে। এটি সংগঠনের ৭০০ তম সভা। বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি আর নান্দনিক সৌন্দর্যে গড়ে তোলা হাওরকে উপভোগ করতেই এবারের হাওরযাত্রার আয়োজন।

ভোরের আলো সাহিত্য আসরের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল হাবিব রেজা শনিবার ভোর থেকেই মোবাইল ফোনে তাগাদা দিয়ে যাচ্ছেন সকলকে। প্রায় ৫০ জনের অভিযাত্রীদল একে একে মিলিত হন কিশোরগঞ্জ শহরের কালীবাড়ি সংলগ্ন সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে। প্রথম গন্তব্য করিমগঞ্জ হয়ে বালিখলা ঘাট। ভোরের মিষ্টি রোদ গায়ে মেখে বালিখলায় নির্ধারিত ট্রলারে গিয়ে উঠেন সকলেই। সেখান থেকে যাত্রা শুরু মিনি রাতারগুল খ্যাত নিকলী উপজেলার ছাতিরচরের করস বনের উদ্দেশ্যে।

হাওরের পরিবেশ যেন কোনভাবেই নষ্ট করা না হয় এবং সকলেই যেন শৃঙ্খলা বজায় রাখেন সেজন্য ভোরের আলো সাহিত্য আসরের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল হাবিব রেজা, সভাপতি নাট্যকার আজিজুর রহমান, প্রধান পৃষ্ঠপোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা বিআরডিবির উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান ভূইয়া, উপদেষ্টা হীরা মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন আকন্দ, জাহাঙ্গীর কবীর, আলী আকবর খান বাচ্চু, মিরাশ উদ্দিন ফকির, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর রেহান সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। ভট ভট শব্দে বিশাল হাওরে ঢেউ ভেঙ্গে এগিয়ে চলে ট্র্রলার। হাওরে ‍পাশাপাশি চলা যাত্রীবাহী ট্রলার, মাল বোঝাই কার্গো, আবার কোথাও জেলে নৌকার মাছ ধরার দৃশ্য, আকাশে পাখির উড়াউড়ি, ছো মেরে শিকারী পাখির মাছ ধরা। আর পানির ওপর ভেসে থাকা ছোট ছোট গ্রাম, আবুরা সড়ক, মাঝে মাঝে দৃষ্টিনন্দন সেতু। নয়নাভিরাম এসব দৃশ্য হাওরে নতুন আগন্তুকদের মনে অন্যরকম খেলা করে চলেছে।

ভোরের আলো সাহিত্য আসরের নিয়মিত শিল্পী মাজহারুল ইসলামের গাওয়া গানের তালে তালে অনেকেই হারিয়ে যান অন্য ভুবনে। তার সুরে সুর মেলান কেউ কেউ। এছাড়া কবিতা, ছড়া, কৌতুকসহ প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন, আজিজুর রহমান, সংবাদকর্মী আবুল মনসুর লনু, মাজহার মান্না, রাকিবুল হাসান রোকেল, আবুল কাশেম, সানজিদা ঊষা, রিমা আক্তার, তানিয়া আক্তারসহ অনেকেই। সুর আর ছন্দের তালে তালে এবং প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে কখন যে ট্রলার ছাতিরচরে পৌঁছে গেছে, টেরই পাওয়া যায়নি। তবে দূর থেকে করস গাছগুলোই বার্তা দিয়েছে ছাতিরচরে আগমনের । পানিতে অর্ধেক ডুবে থাকা করস গাছগুলো দেখে মনে হয় যেন মিনি রাতারগুল। গন্তব্যে পৌঁছানোর সাথে সাথেই অভিযাত্রীদলের সদস্য সংবাদকর্মী আলী রেজা সুমন ট্রলার থেকে লাফিয়ে পড়েন পানিতে, কৈশোরের দিনগুলোর মতই শুরু করেন দাপাদাপি। তার দূরন্তপনা দেখে একে একে পানিতে ঝাপিয়ে পড়েন শফিক কবীর, হুমায়ুন কবীর রেহান, ফরহাদ হোসেন, শাহীনুল ইসলাম, কবি সানজিদা ঊষা, হোমিও চিকিৎসক মোবারক হোসেনসহ আরও অনেকেই। দুষ্টুমির ছলে শুরু করেন জলকেলি। বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন তারা। সচকিত হয়ে সম্বিত ফিরে পান তারা দলনেতা রেজাউল হাবিব রেজার তাগাদায়।

সেখান থেকে যাত্রা শুরু হয় মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের উদ্দেশ্যে। তেজোদীপ্ত সূর্য তখন মাঝ আকাশে। তবে ঝিরঝিরে হাওয়া প্রখর রোদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়। এতক্ষণে ক্ষুধার রাজ্য থেকে জঠর জ্বালার বার্তা পেয়ে যান সকলেই। ভোরের আলো সাহিত্য আসরের অন্যতম উপদেষ্টা করিমগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলী আকবর খান বাচ্চু আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন এ জ্বালা মিটাতে। অল্পক্ষণের মধ্যেই সবার হাতে হাতে পৌঁছে যায় খাবারের প্যাকেট। খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে ট্রলার একসময় পৌঁছে যায় দৃষ্টিনন্দন প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে। রিসোর্টে স্বপ্নের মতই কেটে যায় সময়।

শেষ গন্তব্য রাষ্ট্রপতির বাড়ি। অবহেলিত হাওরকে যিনি নিয়ে গেছেন উন্নয়নের মহাসড়কে, অবজ্ঞা করে যে হাওরবাসীকে কেউ কেউ ‘ভাইট্টা গাবর’ বলতো, সেই হাওরবাসীকে নিয়ে গেছেন মর্যাদার আসনে, সেই ভাটিশার্দুল খ্যাত রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি না দেখে যেতে পারলে অতৃপ্তি থেকে যাবে। নতুন আগন্তুকদের কাছে যেন সেটি স্বপ্নের বাড়ি। কিন্তু সে বাড়িতে নেই কোন জৌলুস, নেই চাকচিক্য। আবদুল হামিদের মত তার বাড়িটিও অতি সাধারণ। এরপরও সেটি রাষ্ট্রপতির বাড়ি। রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এ আসনের (কিশোরগঞ্জ-৪) সংসদ সদস্য। হাওরকে জৌলুস আর চাকচিক্যময় করে গড়ে তুললেও তার নিজ বাড়িতে লাগেনি বিলাসিতার ছোঁয়া। আর সে কারণেই অতি সাধারণ বাড়িটি অনেকের কাছে অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

রাষ্ট্রপতির অতি সাধারণ বাড়ি দেখে হতাশ কেউ কেউ। ততক্ষণে সূর্য অনেকটা পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে। ক্লান্তি ভর করেছে প্রায় সকলেরই। এবার ফেরার পালা। ট্রলার যাচ্ছে সেই বালিখলা ঘাটে। সন্ধ্যা নাগাদ তৃপ্তি, অতৃপ্তির ডালা নিয়েই নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যান সকলেই।

আপনার মন্তব্য করুন

error: কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!