নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী সোমবার নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে। ২০১৯ সালের এই দিনে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। এ উপলক্ষে সোমবার কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকার বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সৈয়দ আশরাফ স্মৃতি সংসদ।
সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পন করে জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এম. এ আফজলের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়ার নেতৃত্বে পৌর পরিষদ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুষ্পার্ঘ অর্পন করেন। এছাড়া কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্র লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে প্রয়াত এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বিকালে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও দোয়া মাহফিল।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। স্বাধীনতার পর তিনি ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ–প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ভারতের দেরাদুনে মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
জাতীয় চার নেতার সঙ্গে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাজ্যে চলে যান সৈয়দ আশরাফ। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জয়লাভ করেন। কিন্তু শপথ গ্রহণের আগেই তিনি মারা যান।
ওয়ান ইলেভেনের সময় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রাখতে সৈয়দ আশরাফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ওই সময় তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরে ২০০৯ সালের সম্মেলনে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। পরে দলের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।