নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে হাত খরচের টাকা জোগাড় করতে অটোচালক ডিসিস্ট মনির হোসেন ওরফে ফয়সালকে (১৭) খুন করা হয়। গ্রেফতার দুই আসামি আলী আকবর (২২) ও রাকাত (১৮) কিশোরগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল আমিনের আদালতে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকালে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জড়িত আরো একজনের নাম উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন এ তথ্য জানান।
নিহত অটোচালক মনির হোসেন ওরফে ফয়সাল বাজিতপুর উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার আসামি আলী আকবর (২২) জেলার কটিয়াদী উপজেলার পশ্চিম মণ্ডলভোগ ব্যাপারী পাড়ার ইমতিয়াজের ছেলে ও রাকাত (১৮) বাজিতপুর উপজেলার পূর্ব-কুতুবপুরের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। আসামি আলী আকবরকে ২১ জুন রাত পৌনে ১টার দিকে তার বাড়ি থেকে ও রাকাতকে ২২ জুন ভোরে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ পিবিআইয়ের একটি দল।
তিনি জানান, তিন বন্ধু আলী আকবর, কাউসার ও রাকাত মিলে আকবরের সেলুনে বসে হাতখরচের টাকার জন্য অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিন বন্ধু মিলে বাজিতপুর উপজেলার সরারচর বাজারে ওয়াজ শুনতে যায়। ওয়াজ শুনে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টার দিকে অটোস্ট্যান্ড থেকে আসামি কাউসার একটি অটোরিকশা দুইশত টাকায় ভাড়া করেন। তারা অটোচালককে উজানচরের দিকে নিয়ে যায়। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী উজানচর যাওয়ার মাঝ পথে বাংলাবাজার পৌঁছলে আসামিরা অটো চালককে গাড়ি ঘুরিয়ে পুনরায় সরারচরের দিকে যেতে বলেন। সরারচর বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের কাছে তালতলা নামক স্থানে আসামাত্রই পিছন থেকে কাউছারের সাথে থাকা রশি দিয়ে চালক ডিসিস্ট মনির হোসেনের গলায় পেচিয়ে ধরে রাখে। একপর্যায়ে অটো চালকের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তিন বন্ধু মিলে তালতলার নিচে রাস্তার ঢালে অটো চালকের মরদেহ ফেলে দেয়। পরে আসামি রাকাত অটো চালিয়ে ব্রাহ্মনগাঁও নয়াবাজারের একটি গ্যারেজে নিয়ে যায়। অটো গাড়িটি রাতে গ্যারেজে চার্জে দিয়ে আসামিরা যার যার মত বাড়িতে চলে যায়। পরদিন আসামি আলী আকবর, কাউসার ও রাকাত গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বাজিতপুরের দুম্মাপুর এলাকায় এডভোকেট মার্কেটের সাদ্দাম ভাঙ্গারীর দোকানে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করেন। তিনজন প্রত্যেকে সমপরিমাণ ভাগে ৪০০ টাকা করে নেন এবং বাকি ৩০০টাকা গাড়ি ভাড়া ও খাওয়া বাবদ খরচ করেন। হত্যাকাণ্ডের সময় অটোচালকের কাছ থেকে ছিনতাই করা মোবাইল ফোনটি আসামি আলী আকবর ভাগে পায়। আসামি আলী আকবর উক্ত মোবাইল ফোনটি নিয়ে জুয়া খেলার মাঠে হৃদয়ের কাছে ৩০০ টাকায় বিক্রি করে। পরে এ মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, অটোচালক ডিসিস্ট মনির হোসেন ওরফে ফয়সাল হত্যার পর তার বাবা বাজিতপুর থানায় ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে চলতি বছরের ২৪ মে মামলাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নিদের্শে কিশোরগঞ্জ পিবিআই মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে।