নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ১০ বছর ৪১ দিন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে এবারই প্রথমবার নিজ জন্মভূমি কামালপুরে গিয়েছেন সদ্য সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নৌকাযোগে মিঠামইনের কামালপুরে পৌছান আবদুল হামিদ। বাড়ির ঘাটে নেমে অপেক্ষায় থাকা সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের আবদুল হামিদ আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছে। আপনারা আমাকে যা দিয়েছেন আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আজকেও আপনারা শত শত নৌকা নিয়ে আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এখন আমি নিয়মিত বাড়িতে আসবো, আপনাদের সাথে দেখা হবে, মতবিনিময় হবে। আমার আর কোনকিছুই চাওয়া-পাওয়ার নেই। এখন আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
কামালপুরে পৌছার পর বাড়ির প্রাঙ্গণে গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন তিনি।
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে কিশোরগঞ্জ শহরের খড়মপট্টিস্থ বাসভবন থেকে সড়কপথে রওনা দেন তিনি। বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে স্বাগত জানাতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষকে ফুল নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
এছাড়াও হাওরের প্রবেশপথ করিমগঞ্জের বালিখলা ঘাট এলাকায় শতাধিক ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন হাওরের বিপুল সংখ্যক মানুষ। পরে বালিখলা ঘাটে মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আছিয়া আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুমীর কুমার বৈষ্ণব, মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট শরীফ কামালসহ বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ সদ্য সাবেক রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। এর কিছুক্ষণ পরই সেখান থেকে নৌকাযোগে বাড়ির পথে রওনা দেন আবদুল হামিদ।
এ সময় আবদুল হামিদের সঙ্গে ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ, কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট শামসুন্নাহার নেলী, আবদুল হামিদের নাতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হামিদ জ্বীম ও রিফাহ তাসনীম হামিদ।
মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুমীর কুমার বৈষ্ণব বলেন, সদ্য সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মহোদয় তার নিজ গ্রামে এসেছেন। তিনি আজ বাড়িতে আসবেন শুনে হাওরবাসীর মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সকাল থেকেই অনেকে গিয়ে বালিখলা ঘাটে বসে ছিলেন। তারা নিজেদের টাকায় নৌকা ভাড়া করে এসেছেন। হাওরবাসী তাকে কাছে পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত।
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, আমার পিতা কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের নেতা। তিনি তৃণমূলের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করেছেন। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পাওয়ার আগে জেলার বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়িয়েছেন। তৃণমূলের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে ওনার আত্মার সম্পর্ক। কিন্তু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনীর কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এভাবে সবার সঙ্গে আগের মতো মিশতে পারেননি। সফলভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে তিনি আবারও আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। সবার ভালবাসায় তিনি মুগ্ধ।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষে গত ১৮ জুন বিকালে প্রথমবারের মতো কিশোরগঞ্জে আসেন মো. আবদুল হামিদ। শহরের খড়মপট্টি এলাকার বাসভবনে অবস্থান করছিলেন তিনি। এবারের ঈদুল আজহা পালনের উদ্দেশ্যে মিঠামইন গেলেন তিনি।