ঢাকাবুধবার , ২৮ জুন ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস ঐতিহ্য
  5. করোনা আপডেট
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রীড়া জগৎ
  8. জাতীয়
  9. তথ্য প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. নারী অধিকার
  12. প্রবাস সংবাদ
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. সম্পাদকীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

২০ টাকার কোরবানি

প্রতিবেদক
-
জুন ২৮, ২০২৩ ২:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন: কোরনানির মাংস তিন ভাগের এক ভাগ গরিবকে দেওয়ার, আবার পুরোটাই কোরবানিদাতা নিজে রেখে দেওয়ার বিধানও রয়েছে। নানা জটিলতায় অনেক গরিব মানুষ কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত হয়লোকলজ্জা বা অন্য কোন কারণে অনেকেই মাংস নিতে ভিড় করেননা কোরনানিদাতাদের বাড়িতে নানা কারণে গরিবঅসহায়দের বাড়িতেও পৌঁছানো হয়না কোরবানির মাংস সাধ আছে, সাধ্য নেই, এমন কিছু সংখ্যক মানুষ মিলে গঠন করেছেন হতদরিদ্র সমিতি তাদের লক্ষ্য ঈদুল আজহায় কোরনানি দেওয়া

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের মূল সতাল গ্রামের ২২ জন গরিব মানুষ মিলে গঠন করেছেন এই হতদরিদ্র সমিতি। প্রতিদিন ২০ টাকা করে সঞ্চয় করেন তারা। সমিতির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন সদস্যদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা সংগ্রহ করেন। সভাপতি মাহতাবসহ সমিতির তিনজন সদস্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সদস্যদের সকলেই দিনমজুর শ্রেণির।

মাহতাব উদ্দিন জানান, সাত বছর ধরে তারা এই সমিতি পরিচালনা করে নিজেদের জমানো টাকায় কোরবানি দিয়ে আসছেন। প্রতিদিন ২০ টাকা করে সঞ্চয় করেন তারা। জমানো টাকা আবার ছোটখাট ব্যবসায়ও খাটানো হয়। বছর শেষে জমানো টাকায় কোরবানির ঈদের সময় গরু কিনেন তারা। এবার  ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির গরু কিনেছেন। গরু কিনতে গিয়ে ৬ হাজার টাকা কম পড়েছে এবার। পরে সমিতির সদস্যরা মিলে সেটা পরিশোধ করেছেন। গরু কিনে টাকা উদ্বৃত্ত থাকলে সেটা কোরবানির মাংসের সঙ্গে সে টাকার অংশও সদস্যদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়। প্রতি কোরবানির ঈদের পরদিন থেকে তারা আবারও ২০টাকা করে জমাতে শুরু করেনতিনি আরও জানান, প্রথমদিকে ১০টাকা করে জমা করে কোরবানি দিতেন। কিন্তু এবার জিনিসপত্রসহ কোরবানির পশুর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন ২০টাকা করে সঞ্চয় করেন।

সমিতির সদস্য মো. ছাদেক বলেন, অনেক ধনী মানুষ কোরবানির গোস্ত ফ্রিজে রাইখ্যা দেয়। গরিবরারে (গরিবদেরকে) দেয়না। ঈদের সময় পোলাপানরা গোস্তের লাইগ্যা আবদার করে, কিন্তু দিতারিনা (দিতে পারিনা) আমরা অহন ২২ জন গরিব মানুষ মিল্যা কোরবানি দেই। গোস্তের অভাব অয়না (হয়না)

সমিতির সদস্য লাভলী আক্তার বলেন, কোরবানি দেওয়ার সামর্থ আমরার নাই। গোস্তের জন্য কারও বাইত (বাড়িতে) যাইতেও পারিনা, লজ্জা লাগে। যারা কোরবানি দেয়, তারাও আমরার বাড়িতে গোস্ত দেয়না। গরিবেরও তো সাধ আছে। একলা (একা) না পারি, দশে মিল্লে তো পারবাম (পারবো) অহন (এখন) হতদরিদ্র সমিতিতে ২০ ট্যাহা জমা কইরে (করে) আমরা কোরবানি দেই

এবার নিজেদের জমানো টাকা এবং ব্যবসায় খাটানো টাকাসহ ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা হয় তাদের। কোরবানির গরু কিনেছেন ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকায়। বাকি ৬ হাজার টাকা সকলে মিলে পরিশোধ করেছেন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই এলাকায় এমন ২০টির মত সমিতি রয়েছে। প্রতি কোরবানির ঈদে তারা নিজেদের জমানো টাকায় কোরবানি দেন। মাংসের জন্য কারও বাড়িতে ভিড় করেননা

আপনার মন্তব্য করুন