অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: ডুবে যাওয়া দুজনকে উদ্ধার করে নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন সাবিকুল ইসলাম (২৫) নামে এক ব্যবসায়ী।
ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার ভাতশালা এলাকার। সোমবার সন্ধ্যার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল তার লাশ উদ্ধার করে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের কাকুরিয়া গ্রাম থেকে একটি গরু নিয়ে পাঁচ নারী-পুরুষ ও দুই শিশু ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে বাজিতপুর উপজেলার হাছানপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। অষ্টগ্রামের কাস্তুল ইউনিয়নের ভাতশালা এলাকায় পৌঁছলে তীব্র স্রোতে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় অনেকেই দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ছবি তুলছিলেন। কিন্তু কেউ তাদেরকে উদ্ধারে এগিয়ে যায়নি।
ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কে (অলওয়েদার সড়ক) ঘুরতে আসা সাবিকুল ইসলাম নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ডুবে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি এক শিশু ও এক নারীকে পানি থেকে উদ্ধার করেন। পরে নিজেই হাওরের পানিতে তলিয়ে যান সাবিকুল। অন্য যাত্রীরা তীরে উঠতে সক্ষম হন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সাবিকুলের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত সাবিকুুল ইসলাম অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বরাগীরকান্দি গ্রামের মোল্লা বাড়ির আবদুর রহিমের ছেলে। তিনি আদমপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী।
আদমপুর ইউনিয়নের চিকনারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবদে মোস্তফা রোমান জানান, সাবিকুল ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত সাহসী ও পরোপকারী। তাদের পরিবারে সাত ভাইয়ের মধ্যে সাবিকুল সবার ছোট। আজ দুপুরে সে হাওরের অলওয়েদার সড়কে ঘুরতে গিয়েছিল। তার চোখের সামনে দুর্ঘটনা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিপদে পড়াদের উদ্ধার করেন। এক পর্যায়ে উঠতে গিয়ে নিজেই তলিয়ে যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের অধিনায়ক সাব অফিসার কবির আহমেদ ভূইয়া জানান, দুপুর দেড়টায় নৌদুর্ঘটনার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। পরে বাজিতপুর থেকে ডুবুরিরা এলে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। সন্ধ্যায় মরদেহ উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
