ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের দুইপক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও কিশোরগঞ্জে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৌটুপি গ্রামের কর্তা বাড়ি ও সরকার বাড়ির মধ্যে ৫৬ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এ দ্বন্দ্বে উভয়পক্ষের খুন হয়েছেন ১৪ জন। বর্তমানে সরকার বাড়ির পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সরকার শেফায়াত উল্লাহ। অন্যদিকে কর্তা বাড়ির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন৷
গত বছর ১৬ জুন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বংশের মধ্যে সংঘর্ষে কর্তা বাড়ির নাদিম নিহত হন। ৬ আগস্ট ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সাদেকপুরের মেন্দিপুর পূর্বপাড়া এলাকায় দুই গ্রæপের সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে ৭ আগস্ট সংঘর্ষে টেটার আঘাতে জহিরুল্লাহ নামে একজন নিহত হন।
দ্বন্দ্ব নিরসনের লক্ষ্যে প্রায় ১৫ দিন আগে মৌটুপী গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে একটি শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। উভয়পক্ষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেও গতকাল মঙ্গলবার বিকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষের নারী পুরুষসহ ৩০ জন আহত হয়।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, পূর্বশত্রæতা চলছে বহু বছর যাবত। আমি অতিষ্ঠ হয়ে ভৈরব শহরে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করছি। দুইমাস আগে জামিনে বের হয়েও বাড়ি যাইনি। এলাকার শান্তি বজায় রাখতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শান্তি কমিটি করে আজ বাড়ি যাই। অতর্কিতভাবে শেফায়াত গ্রæপ হামলা করে।
শেফায়েত চেয়ারম্যানের ভাই আল আমিন বলেন, শান্তি কমিটি হওয়ার পর স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গ্রামে আসার কথা। তা না করে তারা ভোর থেকে এলাকায় আসা শুরু করে। পরে তারা আমাদের বংশের লোকদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের পক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে।
ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব জানান, মৌটুপি গ্রামের মানুষ বংশ পরম্পরায় শত্রæতা, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুগ যুগ ধরে ঝগড়া বিবাদ করছে। আজ দুই বংশের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। উভয়পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।