নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জে হেফাজতের হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতা মো. মনির হোসেনকে চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
সোমবার রাতে রাষ্ট্রপতিপুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি কিশোরগঞ্জ শহরস্থ নিজ বাসায় মনিরের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। এ সময় মনিরের সাথে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উমান খান উপস্থিত ছিলেন।
মনির ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার মো. সোহরাব উদ্দীনের ছেলে। পরিবারে ৮ ভাইয়ের মধ্যে মনির চতুর্থ।
জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে কেন্দ্র করে গত ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এক পর্যায়ে হেফাজতকর্মীরা জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়েও হামলা চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্র লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। বেশ কিছুক্ষণ চলে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। হামলায় আহত হন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. মনির হোসেন তাদের মধ্যে একজন। আহত অন্য নেতাকর্মীরা সুস্থ্ হয়ে উঠলেও বামচোখের দৃষ্টি হারান ছাত্রলীগ নেতা মনির। এ অবস্থায় মনিরের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করে জেলা ছাত্রলীগ। মনির প্রথমে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে ঢাকায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিলে সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মনিরের বাম চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান।
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন জানান, হেফাজতের হামলায় দৃষ্টি হারানো ছাত্রলীগ নেতা মনিরের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে শুরু থেকেই আমরা পাশে থেকেছি। তিনি জানান, মনিরের সুচিকিৎসার ব্যাপারে আমরা আমাদের অভিভাবক কিশোরগঞ্জ–৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক মহোদয়কে জানাই। পরবর্তীতে তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তার ব্যবস্থা করেন। একজন আহত ছাত্রলীগ নেতার চিকিৎসার জন্য এ সহায়তা কর্মীর প্রতি নেতার ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন তিনি। এজন্য সংসদ সদস্য তৌফিকের প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান এই ছাত্রনেতা।
আহত ছাত্রলীগ নেতা মনির জানান, হেফাজতের হামলায় আমার বামচোখের দৃষ্টি হারিয়েছি। এমন দুঃসময়ে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সার্বক্ষণিক আমার পাশে ছিল এবং আমার চিকিৎসার ব্যয়ভাব বহন করছেন তারা। আমি আহত হওয়ার পর থেকে জেলা ছাত্রলীগের পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ–৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ভাই নিয়মিত আমার খোঁজখবর নিয়েছেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে আমার হাতে তুলে দিয়েছেন। এজন্যে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, দায়িত্ববোধ থেকেই মনিরের জন্য এ সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দলের যে কোন নেতাকর্মীর আপদ বিপদে অতীতের মত সবসময় পাশে থাকবেন বলে জানান এমপি তৌফিক।