কওমি মাদরাসাসহ সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি আল্লামা নূরুল হূদা ফয়েজী। এ সময় সংগঠনের অন্যান্য নেতারাও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একমাত্র কওমী মাদরাসাতেই সকল শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দেয়া হয়। এখানে কোনো প্রাইভেট পড়ানো, কোচিং ও নোট বাণিজ্য হয় না। শিক্ষকগণ পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানে মনোনিবেশ করেন এবং তাদের আয় উপার্জনও সম্পূর্ণভাবে বেতন-ভাতার ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের আয়-উপার্জন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে আছে। উপার্জনের জন্য বারোয়ারি ধান্দা না করে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষায় একনিষ্ঠতার এই শুদ্ধবাদীতাই যেন কওমি শিক্ষকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইসলামী সঙ্গীত অঙ্গনের কিংবদন্তি আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ সম্পূর্ণ জিবনী
বক্তব্যে আরো বলা হয়, আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, নির্ভেজাল শিক্ষানিষ্ঠ শিক্ষকদের শিক্ষানুরাগকে সম্মান করে এবং তাদের মানবিকদিক বিবেচনা করে অবিলম্বে সকল কওমি মাদ্রাসা খুলে দেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে পর্যায়ক্রমে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দেন।
দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রজেক্টকে সাধুবাদ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, এই মহৎ কাজের জন্য বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। একইসঙ্গে মডেল মসজিদগুলোকে সব দিক থেকে মডেল মসজিদে রুপান্তরে আমাদের কিছু প্রস্তাবনা রয়েছে। মডেল মসজিদের জনবল নিয়োগে ওলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে নিয়োগ বোর্ড গঠন করতে হবে। যাতে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন এবং কোনোরকম দুর্নীতি ছাড়াই যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া যায়। মডেল মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনও খাদেমদের জন্য যে বেতন কাঠামোর প্রস্তাব করা হয়েছে; তা রীতিমতো অসম্মানজনক ও বৈষম্যমূলক। ইমাম পদের যোগ্যতা হিসাবে হফেজ, দাওরা/কামিল, মুফতি, মুহাদ্দিস চাওয়া হয়েছে। মাস্টার্সও উচ্চতর ডিগ্রির বিপরীতে যে বেতন-কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে, তা কিছুতেই সুবিবেচনা প্রসূত নয়। মডেল মসজিদের ইমাম-খতিবদের জন্য প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ও বেতন-ভাতা, মুয়াজ্জিনদের জন্য ২য় শ্রেণি এবং খাদেমদের জন্য তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ৫৬০টি মডেল মসজিদের বাকিগুলোর নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য ওলামাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ মসজিদ নির্মাণে ইতো মধ্যেই দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে, যা দুঃখজনক।
এছাড়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে আগামী কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমোদন দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। কাঁচা চামড়া নিয়ে অবৈধ কারসাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করতে হবে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে যাতে ট্যানারিগুলো চামড়া ক্রয় করে, তার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।