নিজস্ব প্রতিবেদক: রেলের টিকিট কালোবাজারি থেকে শুরু করে এহেন অপকর্ম নেই তারা করেনা। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একপ্রকার জিম্মি তাদের কাছে। এরা সংখ্যায় পাঁচজন, ‘পঞ্চপাণ্ডব’ হিসেবে খ্যাত। সবশেষ রেলপুলিশের ওপর হামলা করতেও কুণ্ঠিত হয়নি তারা। অবশেষে রেলপুলিশের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে এই পঞ্চপাণ্ডবের বিরুদ্ধে।
সুরাইয়া আক্তার বিউটি (৪০), তার স্বামী মো.শাহীন (৫০), বিউটির বোন মোছা. হেপী আক্তার (৩৮), তার স্বামী ভুট্টু মিয়া ( ৫০) ও বিউটির ছেলে রাফি (২২) । বিউটি কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের আয়া, হেপী গেটম্যান, ভুট্টু চট্টগ্রাম রেলওয়েতে কর্মরত হলেও থাকেন কিশোরগঞ্জে। শাহীন ও রাফি দীর্ঘদিন যাবত টিকিট কালোবাজরির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা সবাই কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বগাদিয়া এলাকার বাসিন্দা। থাকেন কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে কলোনিতে।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে দায়িত্ব পালনকালে রেলের এক পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। গত ৩ মে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন দুপুরে হামলার শিকার রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ছোটন শর্মা বাদী হয়ে এ পাঁচজনকে আসামি করে রেলওয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিউটি, হেপী, শাহীন, ভুট্টু ও রাফির নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে টিকিট কালোবাজারি হয়ে আসছে। তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের হাতে একপ্রকার জিম্মি বলে জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ইউসুফ জানান, ঈদেরদিন বিকালে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে বুকিং সহকারীর সাথে আসামিদের তর্ক–বিতর্ক হয়। পরে আসামিরা কাউন্টারের ভিতরে ঢুকে বুকিং সহকারী রফিককে মারধর করে। পরে বাইরে গিয়ে আবারও কাউন্টারের সামনে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। এক পর্যায়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে টিকিট নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ বিষয়টিতে বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। ঘটনাটি তিনি রেলওয়ের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন বলে জানান। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ের পক্ষ থেকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, ঘটনার দিন স্টেশনে যাত্রীদের প্রচুর ভীড় জমে। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছিল। এ সময় কাউন্টারের সামনে চিৎকার শুনে পুলিশ এগিয়ে গেলে আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশও তাদের পিছু নেয়। তাদেরকে ধরতে না পেরে পুলিশ কাউন্টারে সামনে চলে আসে। আধাঘন্টা পর আসামিরা আবারও সংঘবদ্ধভাবে কাউন্টারের সামনে এসে দায়িত্বরত এসআই ছোটন শর্মাকে গলাধাক্কা মারে। পরে শার্টের কলার ধরে টানা হেঁচড়া করে ও কিল–ঘুষি মারে।
ঘটনার পরদিন হামলার শিকার পুলিশ কর্মকর্তা ছোটন শর্মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান রেলওয়ে থানার ওসি।