নিজস্ব প্রতিবেদক: তারেক রহমান দেশে আরেকটি ১৫ আগস্ট সৃষ্টি করতে চায়। লন্ডনে বসে সেই ষড়যন্ত্রই করছে সে। আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করে সকল ষড়যন্ত্র চক্রান্তের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে।
তিনি আজ সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মির্জা আজম বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে আমরা একজন কর্মীও সেদিন জীবন দেইনি। কোন প্রতিরোধও আমরা করতে পারিনি।
আর এখন নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার। তার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে। এখন নতুন করে আরেকটি ৭৫ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থা দিয়ে এসব প্রতিরোধ করা যাবেনা। তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করে সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান মির্জ আজম এমপি।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে ১৫১ টি আসন না পেলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবেনা। সেজন্য কিশোরগঞ্জের সবগুলো আসনে জিততে হবে। তা না হলে ক্ষমতায় যাবে বিএনপি। আর প্রধানমন্ত্রী হবে তারেক রহমান। এই তারেক রহমান লন্ডনে বসে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।
তাদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হলে দলকে সুসংগঠিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। সেজন্য ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সব জায়গায় নিয়মিত সম্মেলন করে তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
ইটনায় ১৭ বছর ধরে সম্মেলন হয়না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা আমাদের দুর্বলতা। যদি নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হতো, তাহলে অন্তত ছয়জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিতে পারতেন।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্মেলন উপহার দেওয়ায় কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে ধন্যবাদ জানান প্রধান অতিথি মির্জা আজম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এমন সম্মেলন আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ইটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট জিল্লুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এম এ আফজল। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সদস্য সাবেক এমপি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রিয় সদস্য সাবেক এমপি এডভোকেট সানজিদা খানম, কেন্দ্রিয় সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, কেন্দ্রিয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রিয় সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজি, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, সাবেক এমপি এডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক পিযুষ কান্তি সরকার, আমিনুল ইসলাম বকুল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহবুব ইকবাল, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. খলিলুর রহমান।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইসমাইল হোসেন। সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম স্বপন।
উদ্বোধনের পর ইটনা সরকারি মহেষ চন্দ্র মডেল শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অতিথিদেরকে স্বাগত জানায়। পরে অতিথিদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। ইটনার সবকটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে উৎসবের আমেজে সম্মেলনে যোগদান করেন।
সম্মেলনে সভাপতি পদে একমাত্র প্রার্থী চৌধুরী কামরুল হাসানকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী হওয়ায় দলের জেলা ও কেন্দ্রিয় নেতারা সমঝোতার মাধ্যমে সোহরাব উদ্দিন ঠাকুর খসরুকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেন।