নাঈম শেখ, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা: চা বিক্রেতা বাবা ধারদেনা করে মাত্র ১৩ দিন আগে ছেলেকে পাঠায়িছিলেন সৌদি আরব। সর্বশেষ একদিন আগে ফোনে বাবাকে কথা বলে জানায়, সে ভালো আছে, কাজও পেয়েছে। মাস শেষে টাকা পাঠাবে। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পর খবর আসে রাকিব সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
রবিবার সৌদি আরবের সময় বেলা দেড়টার দিকে তায়েফের একটি সড়কে গাড়িচাপায় নিহত হন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের গাঙ্গিনাপাড় গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে রাকিব। ঘরে দেড় বছরের শিশু সন্তানকে বুকে নিয়ে কান্না থামছেই না স্ত্রীর।
স্থানীয় সুত্র ও পরিবারের লোকজন জানান, চাঁন মিয়া স্থানীয় সিডস্টোর বাজারে একটি চায়ের দোকান চালান। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। দ্বিতীয় ছেলে রাকিবকে সৌদি আরব পাঠানোর জন্য চা-দোকানের আয় থেকে ৫০ হাজার টাকা ও নানা জায়গা থেকে আরো তিন লাখ টাকা ধার করতে হয়েছে চান মিয়াকে। তবু বুক ভরা আশা ছিল চাঁন মিয়ার। তার বিশ্বাস ছিল এবার হয়তো সকল কষ্টের অবসান হবে। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় থেমে গেল পরিবারটির সব স্বপ্ন।
রাকিবের ছোট ভাই মো. সাকিবুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার জানান, গত পয়লা জুন তার বড়ভাই রোড ক্লিনারের কাজ নিয়ে সৌদি আরবের রিয়াদ পৌঁছান। সেখানে পৌঁছার পর তার ভাই তাায়েফে কাজে যুক্ত হয়েছেন বলে বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন। গত রবিবার সকালেও রাকিবুল ফের ফোন করে পরিবারের সকলের খবর নিয়েছে। কিন্তু দুপুরেই সৌদি প্রবাসী এক বাঙালি ফোন করে রাকিবুলের মৃত্যু সংবাদ দেন।
দেড় বছরের শিশু পুত্র তাসিনকে নিয়ে বিধবা হলেন রাকিবের স্ত্রী তানজিনা আক্তার। মা রেজিয়া খাতুনের আর্তনাদ “আমার বাবার মুখটা দেখতে চাই। নিজের মাটিতে তাকে কবর দিতে চাই।”
শোক শুধু ওই পরিবারে নয়, গোটা এলাকায় বিরাজ করছে। শোকাহত পরিবারটি এখন তাদের প্রিয় রাকিবুলের লাশের অপেক্ষার প্রহর গুনছে।