ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রিমা প্রামাণিক (১৯) নামে এক নার্সের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ তার মৃত্যু রহস্যজনক।
তিনি নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের সেন্টু প্রামাণিকের মেয়ে।
ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড অর্থোপেডিক সেন্টার থেকে সোমবার সকাল ৯ টার দিকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তিনি এই হাসপাতালে বিগত দুই বছর যাবৎ নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।
রিমার বড়বোন তনিমা প্রামাণিক জানান, রিমা দুই বছর যাবৎ এই হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করছে। গত বুধবার হাসপাতালে থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিল সে। শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ফোনে বাড়ি থেকে ফিরে আসে রিমা। আজ ভোরে হাসপাতাল থেকে ফোন করে তাকে জানানো হয় তার বোন আত্মহত্যা করেছে। তনিমা আরও জানান, তিনি গিয়ে তার গলায় উড়না পেঁচানের দাগ দেখতে পান। কিন্তুু মরদেহটি ছিল বিছানায় শুয়ানো। বিষয়টি রহস্যজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড অর্থোপেডিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হানিফুর রহমান সুমন জানান, বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে শনিবারে এসেছে রিমা। গতকাল রাত ৩ টার দিকে আমাকে ফোন করে জানায়, সে সকালে বাড়ি চলে যাবে। তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ কথা শুনে আমি তার আরেক সহকর্মী লিজাকে ফোন করে বলি রিমা পাগলামি করছে। তুমি তাকে তোমার কাছে নিয়ে আসো । এ কথা শুনে লিজা গিয়ে রিমাকে তার রুমে নিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করে। এ সময় লিজা আরেকজন রোগী দেখতে গেলে এই ফাঁকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে গিয়ে ফ্যানের সাথে উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও জানান, রাত ৩ টা ৫৯ মিনিটি রিমা আবারও লিজার নাম্বারে ফোন করে। কিন্তুু লিজা রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তার কলটি রিসিভ করতে পারেনি। রুমে ফিরে দেখেন ফ্যানের সাথে উড়না পেচিয়ে রিমা ঝুলে আছে। এ সময় সে জীবিত আছে ভেবে তাকে নামিয়ে আনেন তারা। তিনি আরও বলেন, রিমা আত্মহত্যা করার আগে একটি চিরকুট লিখে গেছে। সেখানে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় এ কথাও লিখে গেছে। রিমা কী কারণে আত্মহত্যা করেছে সে বিষয়টি বুঝতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাসাপাতালের বিছানা থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, রিমার কাছে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। এতে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় লেখা রয়েছে উল্লেখ করে ওসি জানান, তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলা যাবেনা।