মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে সাবেক ইউপি সদস্যকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত শেখ আব্দুল হেলিম (৩৫) ঘাগড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিলেন। তিনি ধোবাজোড়া গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে।
সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের শিয়ারা এলাকায় তাকে নিয়ে মারধর করা হয় । পরে সাড়ে ১১ টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে ভাগলপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ২ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বড় বোন মনোয়ারা বেগম জানান, শিয়ারা গ্রামের প্রভাবশালী আইয়ুব আলীসহ বেশ কয়েকজনের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ ছিল হেলিমের। এর জেরেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন পূর্বে আইযুব আলীর ভাতিজির সাথে বিয়ে হয় বাবর আলীর ছেলের। বাবর আলী হেলিমের চাচাতো ভাই। আইয়ুব আলীর মেয়ের সাথে বাবর আলীর ছেলের বনিবনা না হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শত্রুতা শুরু হয়। এই বিরোধের জেরে আইয়ুব আলী তার নিজের ঘরে আগুন দিয়ে বাবর আলী, তার ছেলে এবং হেলিম মেম্বারকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে কিছুদিন যেতে না যেতেই বাবর আলীকে মারধর করেন আইয়ুব আলী ও তার লোকজন। এক পর্যায়ে স্ট্রোক করে মুত্যু হয় বাবর আলীর। এ ঘটনায় হেলিম মেম্বারের সহযোগিতায় আইয়ুব আলীসহ তাদের লোকজনের নামে মামলা করে বাবর আলীর পরিবার৷ এতে হেলিম মেম্বারের প্রতি তাদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। তিনি বলেন, এ ক্ষোভের বশবর্তী হয়েই বাজার থেকে হেলিম মেম্বারকে নৌকায় তুলে বাড়িতে নিয়ে প্রথমে হাত পা ভেঙে দেয়। পরে তার উরুতে একাধিক টেটা ঢুকিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রাখে। খবর পেয়ে ঘাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, গত রাত ৯ টা/ সাড়ে ৯ টার দিকে বাজার থেকে আইয়ুব আলীর লোকজন হেলিমকে নৌকায় তুলে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে তাকে বেদম মারধর করে। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় আইয়ুব আলীর বাড়ির সিড়িঘাট থেকে তাকে উদ্ধার করেন তিনি। পরে তাকে মিঠামইন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ভাগলপুরে মেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পূর্ব বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে চেয়ারম্যান জানান।
মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কলিন্দ্র নাথ গোলদার জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। তিনিসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর আইয়ুব আলী ও তার পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানান।