ঢাকামঙ্গলবার , ২০ জুলাই ২০২১
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস ঐতিহ্য
  5. করোনা আপডেট
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রীড়া জগৎ
  8. জাতীয়
  9. তথ্য প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. নারী অধিকার
  12. প্রবাস সংবাদ
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. সম্পাদকীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গরিবের কোরবানি

প্রতিবেদক
-
জুলাই ২০, ২০২১ ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি: কোরনানির মাংস তিন ভাগের এক ভাগ গরিবকে দেওয়ার বিধান থাকলেও অনেক গরিব মানুষ সেটা থেকে বঞ্চিত হয়। লোকলজ্জা বা অন্য কোন কারণে অনেকেই মাংস নিতে ভিড় করেননা কোরনানিদাতাদের বাড়িতে। নানা কারণে গরিব-অসহায়দের বাড়িতেও পৌঁছানো হয়না কোরবানির মাংস। সাধ আছে, সাধ্য নেই; এমন কিছু সংখ্যক মানুষ মিলে গঠন করেছেন হত দরিদ্র সমিতি। তাদের লক্ষ্য ঈদুল আযহায় কোরনানি দেওয়া।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের মূল সতাল গ্রামের ১৪ জন গরিব মানুষ মিলে গঠন করেছেন হত দরিদ্র সমিতি। প্রতিদিন ১০ টাকা করে জমা করেন তারা। সমিতির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন সদস্যদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা সংগ্রহ করেন। সভাপতি মাহতাবসহ সমিতির তিনজন সদস্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সদস্যদের সকলেই দিনমজুর শ্রেণির।

মাহতাব উদ্দিন জানান, পাঁচ বছর ধরে তারা এই সমিতি পরিচালনা করে নিজেদের জমানো টাকায় কোরবানি দিয়ে আসছেন। প্রতিদিন ১০ টাকা করে জমান তারা। জমানো টাকা আবার ছোটখাট ব্যবসায়ও খাটানো হয়। বছর শেষে জমানো টাকায় কোরবানির ঈদের সময় গরু কিনেন তারা। এবার ৭৬ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির গরু কিনেছেন। গরু কিনে যে টাকা উদ্বৃত্ত থাকে, কোরবানির মাংসের সাথে সে টাকার অংশও সদস্যদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়। প্রতি কোরবানির ঈদের পরদিন থেকে তারা আবারও ১০টাকা করে জমাতে শুরু করেন।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, কোরবানি দেওয়ার সামর্থ আমরার নাই। গোস্তের জন্য কারও বাইত (বাড়িতে) যাইতেও পারিনা, লজ্জা লাগে। যারা কোরবানি দেয়, তারাও আমারার বাড়িতে গোস্ত দেয়না। গরিবেরও তো সাধ আছে। একলা (একা) না পারি, দশে মিল্লে তো পারবাম (পারবো)। অহন (এখন) হত দরিদ্র সমিতিতে ১০ ট্যাহা জমা কইরে (করে) আমরা কোরবানি দেই।

সমিতির সদস্য ফজলুর রহমান বলেন, অনেক ধনী মানুষ কোরবানির গোস্ত ফ্রিজে রাইখ্যা দেয়। গরিবরারে (গরিবদেরকে) দেয়না। ঈদের সময় পোলাপানরা গোস্তের লাইগ্যা আবদার করে, কিন্তু দিতারিনা (দিতে পারিনা)। আমরা অহন ১৪ জন গরিব মানুষ মিইল্যা কোরবানি দেই। গোস্তের অভাব অয়না (হয়না)।

এবার নিজেদের জমানো টাকা এবং ব্যবসায় খাটানো টাকাসহ ৮৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে তাদের। কোরবানির গরু কিনেছেন ৭৬ হাজার টাকায়। কোরবানির গোস্তের সাথে বাড়তি টাকা ভাগাভাগি করে দেওয়া হবে সদস্যদেরকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৌলাই এলাকায় ২০টির মত এমন সমিতি রয়েছে। প্রতি কোরবানির ঈদে তারা নিজেদের জমানো টাকায় কোরবানি দেন। মাংসের জন্য কারও বাড়িতে ভিড় করেননা তারা।

আপনার মন্তব্য করুন