আদালত প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে শিশু ধর্ষণ মামলায় শফিকুল ইসলাম (৩৪) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও আসামিকে দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি শফিকুল ইসলাম করিমগঞ্জ উপজেলার পিটুয়া গ্রামের দ্বীন ইসলামের ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এম এ আফজল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিতো। কিন্তু সে এ প্রস্তাব এড়িয়ে যেত। ২০২১ সালের ২০ আগস্ট রাতে শিশুটি প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হয়। টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর আগে থেকেই সেখানে উৎপেতে থাকা শফিকুল মেয়েটির মুখ চেপে ধরে একটি ঝোঁপে নিয়ে ধর্ষণ করে। টয়লেট থেকে ঘরে ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে বের হন। এক পর্যায়ে কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে গেলে ঝোঁপে পড়ে থাকতে দেখেন তাকে। এ সময় শফিকুলকেও হাতেনাতে ধরে ফেলেন তারা। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয় তাকে।
ঘটনার পরদিন সকালে শিশুটির মা বাদী হয়ে শফিকুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। করিমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিসুজ্জামান লিংকন মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করেন। শুনানি শেষে আজ এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এম এ আফজল জানান, শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্তক্রমে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫० হাজার টাকা জরিমানা এবং একই আইনের ৯ (১) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
আরোপিত অর্থদণ্ড ভিকটিমের ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য হবে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নিকট হতে বা তার বিদ্যমান সম্পত্তি হতে আদায় করা সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন, সে সম্পদ হতে বিধিমোতাবেক আদায়যোগ্য হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।