আদালত প্রতিবেদক: মূল মোকদ্দমায় রবিবার জামিন হয়। কিন্তু অন্য একট মোকদ্দমায় ভুল ওয়ারেন্টে বাড়তি একদিন হাজতবাস করতে হয়েছে। সোমবার ইফতারের পর জেল থেকে ছাড়া পান। ভুল ওয়ারেন্টের কারণে বাড়তি একদিন হাজতবাস করতে হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর সহকারী জজ কাম পারিবারিক আদালতে।
আদালত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। তবে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১১/১৬ নং পারিবারিক মোকদ্দমায় বিবাদী উজ্জ্বল মিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ এপ্রিল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। পরে বাদী আছমা আক্তারের প্রাপ্য দেনমোহর ও ভরণ পোষণ বাবদ আদালতে এক লক্ষ টাকা দাখিল করেন বিবাদী উজ্জ্বল মিয়া। বাকি টাকা কিস্তিতে দেওয়ার আবেদন করলে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে গত রবিবার (১৬ এপ্রিল) তার জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু বিপত্তি বাধে অন্য এক মোকদ্দমায় (মোকদ্দমা নং ৮/০৯) উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু থাকায়। অথচ তিনি এ মামলার কোনো বিবাদী নন। মূল মামলায় তার জামিন হলেও অন্য মামলায় ভুল ওয়ারেন্টের কারণে কারাগারের গেট থেকেই তাকে আবারও জেলহাজতে যেতে হয়। উজ্জ্বল মিয়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া গ্রামের মো. আলাল উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনাটি সোমবার সারাদিনই আদালতপাড়ায় আলোচনা–সমালোচনায় ছিল মুখর। পরে আইনজীবী রিকল হওয়া মর্মে জরুরী আদেশের আবেদন করলে আদালত তা বিবেচনায় নিয়ে উজ্জ্বলের জামিন মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে উজ্জ্বলের নিয়োজিত আইনজীবী মায়া ভৌমিক জানান, ৮/০৯ নং মোকদ্দমার বাদী মোছা. সুরমা আক্তার। এ মোকদ্দমার বিবাদী মিন্টু মিয়া। অথচ বিবাদী মিন্টু মিয়ার স্থলে উজ্জ্বল মিয়ার নাম লিখে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। ফলে তাকে বাড়তি একদিন হাজতবাস করতে হয়েছে। তিনি আরও জানান, যে সেরেস্তাদারের কারণে এমনটি হয়েছে, তিনি বেশ কিছুদিন আগে অবসরে গেছেন। একজন মানুষকে সেরেস্তাদারের ভুলের কারণে কেন বাড়তি হাজতবাস করতে হবে, সে প্রশ্ন করেন আইনজীবী। এটি ভুল মানতে নারাজ তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভুল হলে মিন্টুর স্থলে মন্টু বা সেন্টু হতে পারতো। মিন্টুর স্থলে উজ্জ্বল হয় কেমন করে, এ প্রশ্ন তার। এ অবস্থায় আদালতের কাছে রিকল হওয়া মর্মে জরুরী আদেশের আবেদন করেন আইনজীবী মায়া ভৌমিক।
বর্তমান সেরেস্তাদার মুকসেদ মিয়া জানান, অবসরে যাওয়া সেরেস্তাদার লুৎফুর রহমানের ভুলে এমনটি হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এ. ও) রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি সেরেস্তাদারের ভুলের কারণে হয়েছে উল্লেখ করে জানান, সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছেন।
সোমবার রাত সোয় ৮টার দিকে এডভোকেট মায়া ভৌমিক জানান, ইফতারের পর উজ্জ্বল মিয়া জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।আদালত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় সন্তুষ্ট তিনি।