নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মো. রাব্বি মিয়া (১৫) হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ মামলার গ্রেফতারকৃত এক আসামি বুধবার বিকালে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
পিবিআই সূত্র জানায়, মামলার এজাহারভূক্ত ২ নং আসামি আরজু মিয়াকে (৪৮) মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুলিয়ারচর বাজার এলাকা থেকে এবং ১ নং আসামি সরোয়ার আলম ছরোকে (৪৩) একইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার ওরাইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতার আরজু মিয়া কুলিয়ারচর উপজেলার বড়খারচর (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে এবং সরোয়ার আলম ছরো একই উপজেলার পূর্ব গাইলকাটা গ্রামের ছিদ্দিক মিয়া ওরফে ছেতুর ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি সরোয়ার আলম ছরো পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাব্বিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। বুধবার বিকালে কিশোরগঞ্জের আমলি আদালত নং-২ এ হাজির করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর দত্ত আসামির দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আসামি সরোয়ার আলম ছরো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি প্রদান করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মোহাম্মদ সাখরুল হক খান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি সরোয়ার আলম ছরো ও আরজু মিয়াসহ অন্যান্য আসামিদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সংঘবদ্ধ মাদক, চাঁদাবাজি ও ছিনতাই সিন্ডিকেট রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা জানান, মো. রাব্বি গত ৩ মার্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজ বাড়ি বাজিতপুর উপজেলার দীঘিরপাড় পূর্ব হাটি গ্রামের বাড়ি থেকে বেড়ানোর কথা বলে বের হয়। পরে কুলিয়ারচর বাজারস্থ জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলুম মাদ্রাসার সামনে ঘুরতে আসে। একইদিন ১ নং আসামি সরোয়ার আলম ছরোর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি চুরি হয়। পরে সরোয়ার আলম ছরো, আরজু মিয়া, এমরান, আকাশসহ অন্য আসামিরা মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে রাব্বিকে আটক করে কুলিয়ারচর বাজারস্থ ভূমি অফিসের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে তারা বাঁশের লাঠি ও কাঠের টুকরা দিয়ে রাব্বিকে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। রাত সোয়া ১১টার দিকে তাকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে রেখে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাব্বিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে রাব্বির পিতা মো. মির্জা আলী কুলিয়ারচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকে কিশোরগঞ্জ পিবিআই এর ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। পরে মামলাটি পিবিআইয়ের সিডিউলভূক্ত হয়।