ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জ ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত শিশু রবিউল (৮) তিনদিন পর নিজ ঠিকানায় ফিরে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর বেলা ১১ টার দিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রবিউলকে বুঝে নেন তার পিতা মিলন মিয়া। রবিউল রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর শাহ আলী থানার চিরিয়াখানা রোড এলাকার মিলন মিয়ার ছেলে।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহ আলম মোল্লা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রিফফাত জাহান ত্রপা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর কুমার ধর এর সামনে রবিউলকে তার পিতা মিলন মিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে নিখোঁজ রবিউলের বাবা মিলন মিয়া জানান, মিরপুর ১ নম্বর শাহ আলী থানার চিরিয়াখানা রোড এলাকায় তিন ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। কিছুদিন আগে রবিউলের মা মৃত্যুবরণ করেন। রবিউলকে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়েছিল। সে লেখাপড়া করতে চাইতোনা। বড় ছেলে মিরা, ছোট ছেলে তামিম ও রবিউল মেঝো। তিনি মিরপুর ৮ নম্বরে একটি কমিউনিটি সেন্টারে কাজ করেন।
তিনি আরও জানান, ২২ অক্টোবর রবিবার দুপুরে তিনি রবিউলকে গোসল করানোর পর সে বাড়ির পাশে খেলতে যায়। তিন বন্ধুর সঙ্গে খেলতে বের হয়ে হারিয়ে যায় সে। পরে বন্ধুদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন মেট্রো রেলে সে বিমান বন্দর চলে গেছে। ছেলে হারানোর বিষয়ে ২২ অক্টোবর রাতে মিরপুর থানায় জিডি করতে গেলে ডিউটি অফিসার বলেন, একদিন অপেক্ষায় থাকেন দেখেন ছেলে ফিরে আসে কি না। ২৫ অক্টোবর থানার ওই এসআই জানান ভৈরবে তার ছেলেকে পাওয়া গেছে। পরে তার মাধ্যমে যোগাযোগ করে ভৈরবে যান তিনি। পিতাকে পেয়ে রবিউল খুবই খুশি এবং এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলে।
দুর্ঘটনার পর তিনদিন রবিউলকে রক্ষণাবেক্ষণে রাখা নার্স জান্নাত বেগম বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল রবিউলকে। চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই সময় তার সঙ্গে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সুস্থ হলেও সে সঠিকভাবে তার ঠিকানা বলতে পারেনি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর সোমবার বিকালে ভৈরবের জগন্নাথপুর রেলক্রসিং এলাকায় ঢাকাগামী আন্তনগর এগারসিন্দুর (গোধুলী) ট্রেনের সঙ্গে বিপরিত দিক থেকে আসা কন্টেইনারবাহী একটি ট্রেনের সংঘর্ষে ১৮ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। দুর্ঘটনায় এগারসিন্দুর ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়।