নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাবেক সভানেত্রী ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামী, ভাষা সংগ্রামী বিপ্লবী হেনা দাসের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে কিশোরগঞ্জে।
এ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদ মঙ্গলবার দুপুরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পৌর মহিলা কলেজ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মহিলা পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতিয়া হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পৌর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রওশন আরা লুৎফুন্নাহার।
উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন সংগঠনের জেলা শাখার শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিকা দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত আন্দোলন সম্পাদক কামরুন্নাহার।
হেনা দাসের জন্ম, মৃত্যু, শিক্ষা, রাজনৈতিক, কর্মজীবন, পারিবারিক জীবন, শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদে অবদানসহ সকল লড়াই সংগ্রাম বিষয়ে ধারণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হাশেম।
ধারণাপত্রের উপর আলোচনা করেন কিশোরগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি আব্দুর রহমান রুমী ও প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জেলা গণতন্ত্রী পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী আলমাস, কলেজের সহকারী অধ্যাপক (সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ) সাদেকুর রহমান, প্রভাষক আবুল হাসেম (সাধারণ ইতিহাস বিভাগ), জেলা মহিলা পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক বিলকিছ বেগম, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সালমা হক, সদস্য (কিশোরগঞ্জ মডেল কলেজের প্রভাষক) মাহফুজা আরা পলক প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পৌর মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিভাগ) মেহেরুন তাছনুভা লিপি।
সভায় বক্তাগণ বলেন, হেনা দাস ছিলেন আজন্ম সংগ্রামী এক যোদ্ধা। তিনি একদিকে যেমন শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য লড়াই করেছেন, পাশাপাশি নারীমুক্তি, চা–শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন, কৃষকের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ আমাদের ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বের সংগ্রামের সক্রিয় যোদ্ধা তিনি। হেনা দাস ছিলেন আমাদের একটি প্রজন্মের বাতিঘর।
তারা আরো বলেন, বাংলার নারী জাগরণে যে কজন নারী সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে একজন হেনা দাস। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বাংলাদেশের সকল ক্রান্তিলগ্নে তিনি সক্রিয় ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা কমিশনেরও অন্যতম সদস্য ছিলেন। ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃত্বেও।
বক্তাগণ নতুন প্রজন্মকে হেনা দাসের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মহিলা পরিষদের বিভিন্ন স্থরের সদস্য ও কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।