নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে খুশনাহার হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ সংক্রান্তে গ্রেফতার ৯ আসামির মধ্যে রহমত উল্লাহ (৩০) নামে এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিয়াজুল কাউসার এর আদালতে সোমবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
রহমত উল্লাহ কটিয়াদী উপজেলার বাগপাড়া গ্রামের জাহেদ মিয়ার ছেলে।
গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে কটিয়াদী উপজেলার সতরদ্রোন গ্রামের মাছুয়া বিলের মাঝামাঝি জনৈক চাঁন মিয়ার খাদে খুশনাহারের (৪০) হাত, পা ও মুখ বাঁধা ভাসমান লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, কটিয়াদী উপজেলার বাগপাড়া গামের স্বামী পরিত্যক্তা খুশনাহার পৈত্রিক বাড়ির পাশেই আলাদা বসতবাড়িতে মা ও এক সন্তানসহ প্রায় ২৪ বছর যাবত বাসবাস করে আসছিলেন। ঘটনার ১৫ দিন আগে খুশনাহারের ছেলে করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা গ্রামে তার বাবার বাড়িতে থাকার জন্য চলে যায়। তার বৃদ্ধা মা ৯ ডিসেম্বর বিকালে আরেক মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। ১০ ডিসেম্বর বিকাল ৩ টার দিকে তার মা বাড়িতে এসে ঘর তালাবদ্ধ দেখে ছেলের বাড়িতে খুঁজতে যান। পরে মা ও ভাই খুশনাহারের বাড়িতে গিয়ে জানালার উপরের টিন খোলা ও ঘরে সিঁধ কাটা দেখতে পান। পরদিন (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে খুশনাহারের ছেলে আলীরাজ সতরদ্রোন গ্রামের মাছুয়া বিলের মাঝামাঝি জনৈক চাঁন মিয়ার খাদে মায়ের মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। খবর পেয়ে গচিহাটা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে খুশনাহারের বড় ভাই নজরুল বাদী হয়ে ১২ ডিসেম্বর কটিয়াদী মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী গত ১৪ ডিসেম্বর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আক্তারুজ্জামানকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
তদন্তকালে পুলিশ বাগপাড়া গ্রামের জাহেদ মিয়ার ছেলে রহমত উল্লাহ (৩০), একই গ্রামের মৃত রতন মিয়ার ছেলে হৃদয় (২৪) ও পূর্ব পুরুড়া গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে আব্দুল মমিন ময়নাসহ (২০) ৯ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রহমত উল্লাহ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. আল আমিন হোসাইন জানান, মামলাটির তদন্তকালে খুশনাহারের কানের দুল ও দুল বিক্রির সময়ের সিসি ফুটেজ, ঘটনায় ব্যবহৃত কুড়াল, ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়। তিনি আরো জানান, আসামিরা জানালা দিয়ে ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করে তাকে জোরপূর্বক অন্যত্র নিয়ে যাওয়া, পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা ও মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে পুকুরে ফেলে দেওয়ার বিষয় প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।