ঢাকাFriday , 20 December 2024
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস ঐতিহ্য
  5. করোনা আপডেট
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রীড়া জগৎ
  8. জাতীয়
  9. তথ্য প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. নারী অধিকার
  12. প্রবাস সংবাদ
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. সম্পাদকীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

“এমন আয়োজন জীবনেও দেহি নাই”

প্রতিবেদক
-
December 20, 2024 5:24 pm
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক: চারদিকে পানি আর পানি। দ্বীপের মতই গ্রাম, নাম সুতারপাড়া। বর্ষা এমনকি শুকনো মৌসুমেও গ্রামটিতে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম নৌকা। কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার প্রায় বিচ্ছিন্ন গ্রাম সুতারপাড়া।

হাওরের এই অজপাড়াগাঁয়ে কখনো পা পড়েনি বড় কোন ডাক্তারের। গ্রামের পল্লী চিকিৎসকই তাদের ভরসা। আর্থিক সংকট আর সময়ের অভাবে গ্রামের তেমন কারোর শহরে গিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানো সম্ভব হয়ে উঠেনা

এবারের বিজয় দিবসে সেই আক্ষেপ কিছুটা হলেও দূর হয়েছে গ্রামবাসীর। বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয় গ্রামের দরিদ্র জনগণকে। সুতারপাড়া মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এই স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোক্তা

সুতারপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দিনব্যাপী তিনজন বিশেষঞ্জ চিকিৎসক এবং দুজন টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে ইসিজি, ডায়াবেটিস টেস্ট, ব্লাড প্রেসার চেক, ওজন পরিমাপসহ বিভিন্ন রোগের পরামর্শ দেওয়া হয়

গ্রামের প্রায় পাঁচশত নারী-পুরুষ, শিশু এবং সব শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহণে স্বাস্থ্যসেবা পরিণত হয় উৎসবে। হাতের নাগালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের দেখা পেয়ে বিজয়ের ঝিলিক যেন গ্রামবাসীর চোখে মুখে।

জন্মের পরে এই গ্রামে এমন আয়োজন আর কখনো দেখেননি সুতারপাড়া গ্রামের ৭০ বছর বয়সী বিলাসী বেগম। তিনি বলেন, “এমন আয়োজন জীবনেও দেহি নাই।” 

একই গ্রামের রুপজান বেগম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। অর্থসংকট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে হাসপাতালে যেতে পারেননা তারা। সুতারপাড়া মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিতে পেরে অত্যন্ত খুশি তারা। 

সুতারপাড়া মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা আব্দুল্লাহ শাফি, মাসুদ রানা সাদেক মিয়া জানান, এবারের বিজয় উৎসবে ভিন্নমাত্রা যোগ করতেই এমন আয়োজন করেছেন তারা। মহান বিজয় দিবসে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সেবা দিতে পেরে তারাও গর্বিত এবং আনন্দিত। ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে চিকিৎসা সেবার আয়োজন করতে চান তারা। বিজয়ের এমন উৎসব ছড়িয়ে পড়বে সবগ্রামে। কেউ বঞ্চিত হবে না উন্নত চিকিৎসা থেকে, এমন প্রত্যশা তাদের।  

সুতারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সুতারপাড়া থেকে করিমগঞ্জ উপজেলা সদর প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। নৌকা এবং অটোরিকশায় করে এখান থেকে উপজেলা বা জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হলে চিকিৎসকের ফি এবং যাতায়াত ভাড়া বাবদ অনেক টাকার প্রয়োজন। যা অনেকের পক্ষেই সম্ভভ হয়না। এই গ্রামের একটি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে বাড়িতে বসেই চিকিৎসার সুযোগ হওয়ায় উদ্যোক্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে এমন আয়োজন করা হলে গ্রামবাসী অনেক উপকৃত হবে।

চিকিৎসক তৌফিক আহমেদ শামীম বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের সাধারণ মানুষেরা সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। তাদের কাছে এসে চিকিৎসাসেবা দিতে পেরে তিনিও আনন্দিত বলে জানান।

আপনার মন্তব্য করুন