ঢাকাSaturday , 1 March 2025
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস ঐতিহ্য
  5. করোনা আপডেট
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রীড়া জগৎ
  8. জাতীয়
  9. তথ্য প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. নারী অধিকার
  12. প্রবাস সংবাদ
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. সম্পাদকীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শোলাকিয়া ঈদগাহের ‘চাপিয়ে দেওয়া’ ইমাম পরিবর্তনের দাবি

প্রতিবেদক
-
March 1, 2025 6:49 pm
Link Copied!

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সর্বত্রই পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম পরিবর্তনেরও দাবি উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সোচ্চার অনেকেই। তাদের দাবি, ‘চাপিয়ে দেওয়া’ ইমামকে অবিলম্বে সরিয়ে মোতাওয়াল্লী কর্তৃক নিযুক্ত আগের ইমাম সর্বজন প্রশংসিত মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহকে (কামিল হাদিস/ এমএ প্রথম শ্রেণি, কামিল ফিকহ/ এমএ প্রথম শ্রেণি, কামিল তাফসির/ এমএ প্রথম শ্রেণি, এমএ (ইসলামিক স্টাডিজ) দ্বিতীয় শ্রেণি, এমএ (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি) দ্বিতীয় শ্রেণি (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), এমফিল ফোর্সওয়ার্ক, ২০০২-২০০৫, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) আবারও ইমামের দায়িত্ব দিতে হবে।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, কিশোরগঞ্জের মানুষের প্রাণপুরুষ ছিলেন মাওলানা এ. কে. এম নূরুল্লাহ। তিনি ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে ইমামতি করেছেন দীর্ঘদিন। পরবর্তীতে তার ছেলে মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহকে ইমাম হিসেবে মনোনীত করা হয়। তিনি খুবই সুনামের সঙ্গে সকলের সন্তুষ্টি অর্জন করেই ইমামতি করে আসছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়, আওয়ামী লীগ সরকার হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, অফিস-আদালত দখলের পাশাপাশি মসজিদ-মাদ্রাসা এমনকি ঈদগাহকেও ছাড় দেয়নি। তারা যোগ্য ও বৈধ ইমাম মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহকে অন্যায়ভাবে সরিয়ে বিতর্কিত মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে ইমাম মনোনীত করে। বর্তমান প্রশাসন যেন মুফতি ছাইফুল্লাহর প্রতি সুবিচার করে, সে দাবি জানান তিনি।

কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রমজান আলী বলেন, মাওলানা এ. কে. এম ছাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকা স্বত্বেও তাকে অন্যায়ভাবে সরানো হয়েছিল। আর যাকে ইমাম নিয়োগ করা হয়েছিল তিনি বিতর্কিত। এবার ইমাম নিয়োগে মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

কিশোরগঞ্জ জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি প্রভাষক মাওলানা আলমগীর হোসাইন তালুকদার বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহের ওয়াকফ দলিল অনুযায়ী মোতাওয়াল্লীই ইমাম নিয়োগের অধিকারী। সেটাই বাস্তবায়ন হওয়া উচিত।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আগে ঈদগাহের মোতায়াল্লী কর্তৃক ইমাম নিয়োগ হত। আওয়ামী লীগ আমলে মোতাওয়াল্লীর সেই ক্ষমতাকে কেড়ে নেওয়া হয়, যা কারও কাম্য ছিলনা। এবার মোতাওয়াল্লী কর্তৃক ইমাম মনোনীত হলেই উত্তম হবে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে ঈদগাহের মোতাওয়াল্লী দেওয়ান ফাত্তাহ দাদ খান মঈন বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহের ওয়াকফ দলিল অনুযায়ী ঈদগাহের ইমাম ও ঈদের জামাতের সময় নির্ধারণ করার কথা মোতাওয়াল্লীর। কিন্তু বিগতদিনে মোতাওয়াল্লীর সেই ক্ষমতাকে কেড়ে নিয়ে অন্যায়ভাবে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে ইমাম হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মোতাওয়াল্লীর মনোনীত মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহকে ইমাম হিসেবে পুনর্বহাল দেখতে চান তিনি।

মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহ ২০০৪ সন থেকে ২০০৯ সন পর্যন্ত শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০০৯ সনের ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার চাপে তৎকালীন জেলা প্রশাসক বৈধ ইমাম মুফতি এ. কে. এম ছাইফুল্লাহকে সরিয়ে দেয়। পাশাপাশি মোতাওয়াল্লীর অধিকারকেও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওয়াকফ দলিলকে তোয়াক্কা না করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে। তখন এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করে ঈদজামাত নিয়ন্ত্রণ করে।

এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রামপুরা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

এ অবস্থায় এবার চাপিয়ে দেওয়া ইমাম পরিবর্তনের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

উল্লেখ্য, মুফতি এ. কে. এম ছাইফু্ল্লাহর আগে তার পিতা মাওলানা এ. কে. এম নূরুল্লাহ টানা ৩০ বছর শোলাকিয়া ঈদগাহের অবৈতনিক ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আপনার মন্তব্য করুন