নিজস্ব প্রতিবেদক: একটি রাস্তার জন্য মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বর্ষার পুরো সময়টাই কাদা পানিতে একাকার থাকে রাস্তাটি। বালির বস্তা ফেলে কোনরকমে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ রাস্তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে হামলা, মামলা পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু রাস্তা হচ্ছেনা। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটি ইউনিয়নের কামালিয়ারচর নামাপাড়া গ্রামের।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েকটি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক। এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া এবং রাস্তা নির্মাণের জন্য নিজেরা চাঁদা তুলে ৪০ হাজার টাকা দিলেও কোন কাজ হয়নি। বরং চাঁদার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কামালিয়ারচর নামাপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হক অভিযোগ করেন, তাদের বাড়ি থেকে মূল রাস্তা পর্যন্ত প্রায় কোয়াটার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও বৈদ্যুতিক খুটির জন্য লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে তার চাচাত ভাই মাহবুবুর রহমান মুসাকে দেওয়া হয়। ৮/৯ মাস আগে টাকা দেওয়া হলেও কোন কাজ করেনি মুসা। পরে মোজাম্মেলের ভাইয়ের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক খুটি বসানো হয়। কাজ না হওয়ায় মুসার কাছে টাকা ফেরত চাইলে মোজাম্মেলের সাথে মুসার কথা কাটাকাটি এবং গত ২৮ জুলাই মুসার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মোজাম্মেলের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়। হামলায় মোজাম্মেল (৪৬), তার স্ত্রী রুবি সুলতানা (৩৮) ও মোজাম্মেলের ছোট ভাই জুনায়েদ (৩৬) রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় মোজাম্মেলের বাড়িঘরও ভাঙচুর করে তারা।
এ ব্যাপারে মোজাম্মেল বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মুসাসহ ১২জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ১০ আসামী আদালত থেকে জামিনে গিয়ে মোজাম্মেল ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের হুমকিতে মোজাম্মেল ও তার পরিবার বাড়িতে ফিরতে পারছেনা বলেও মোজাম্মেল জানিয়েছেন। এদিকে সোমবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কালটিয়া বাজারে স্থানীয় জনতা আবু বাক্কার সিদ্দিক নামে মামলার এক আসামীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। মামলার অপর আসামী রমজান এখনও পলাতক।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাহবুবুর রহমান মুসা। টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, তারা নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে তার ওপর মিথ্যা অভিযোগ চাপিয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রেহানুল ইসলাম জানান, ১০ আসামী আদালতে হাজির হয়ে জামিনে রয়েছে। পলাতক দুই আসামীর মধ্যে আবু বাক্কারকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামী রমজানকে গ্রেফতারে তিনি তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানান।
বিন্নাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম বাবুল বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে রাস্তাটি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে। হামলা ও মামলার বিষয়টি তিনি মীমাংসার উদ্যোগ নিবেন বলেও জানিয়েছেন।