নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জে ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়।
বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার বিকালে মামলাটি দায়ের করেন তার মা। মামলায় আসামী করা হয়েছে কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল নামাপাড়া এলাকার কাসেম আলী ওরফে কাছু মিয়ার ছেলে রিপন মিয়াকে (২৪)।
অপর মামলাটি হয়েছে ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে। মঙ্গলবার বিকালে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় একমাত্র আসামী করা হয়েছে কিশোরগঞ্জ শহরের বগাদিয়া গোল মসজিদ এলাকার আলী কবিরাজের ছেলে শাওন (২৭) নামে এক ব্যক্তিকে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাত ৮ টার দিকে আসামী রিপন তাদের বাসায় গিয়ে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েটিকে বিভিন্নভাবে ইশারা ইঙ্গিত দিয়ে চলে যায়। রাত ১১ টার দিকে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান বিছানায় তাদের মেয়ে নেই। পরে তারা প্রস্রাব করতে বের হয়েছে মনে করে বাড়ির আশেপাশে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। ভোর ৬ টার দিকে আসামীর বাড়ির পাশে তাদের পুকুরের পাড়ে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা তাদেরকে জানায়। মেয়েটি বাসায় গিয়ে প্রথমে ইশরায় এবং পরে খাতায় লিখে মা–বাবাকে ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দেয়। সাথে সাথে তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
অপরদিকে ৮ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বগাদিয়া গোল মসজিদ এলাকার শাওন (২৭) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মেয়ের বাবা।
মামলার বাদী জানান, তিনি এবং তার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। স্বামী, স্ত্রী দুজন সকালে বের হন, সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেন। তাদের ৮ বছর বয়সী মেয়ে এবং ৫ বছর বয়সী ছেলে বাসায় থাকে। আর এ সুযোগেই গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আসামী শাওন বাসায় ঢুকে তার ছেলেটিকে দোকানে পাঠিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় মেয়েটি চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশী এক নারী এগিয়ে গেলে শাওন দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঐ নারী ঘটনাটি মেয়েটির মা–বাবাকে জানান। তারা বাসায় ফিরে মেয়ের মুখে ঘটনা শুনে মেয়েটিকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। হাসপাতালে মেয়েটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর থেকে আসামী শাওনসহ তার আত্মীয় স্বজনরা পরিবারটিকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে মেয়ের মা অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, তাদের ভয়ে দুদিন চুপ ছিলাম। কিন্তু এখন চিন্তা করলাম আমি যদি চুপ থাকি তাহলে আজ আমার মেয়ের সাথে এমন করেছে, আগামীকাল আরেকজনের মেয়ের সাথে করবে। তাই মনের ভয় দূর করে মামলা করতে বাধ্য হলাম।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামীদেরকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।