নিজস্ব প্রতিবেদক: অসাধু কাজীদের কারণে বাল্যবিয়ে ও তালাক প্রবণতা বাড়ছে। অনেক কাজী তাদের নির্ধারিত এলাকার বাইরে গিয়েও বিয়ে এবং তালাকনামা পড়াচ্ছেন। এসব কারণে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতাসহ নানাবিধ জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ এলাকায় পপি–পার্ট কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নারী ও কিশোরীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় আলোচকরা এসব কথা বলেন।
মত বিনিময় সভায় আরও জানানো হয়, কোর্ট ম্যারেজের নামে এফিডেভিটের মাধ্যমে অসংখ্য বাল্যবিয়ে সংঘটিত হচ্ছে। অথচ এগুলোর আইনগত কোন ভিত্তি নেই। আর করোনাকালে এসবের প্রবণতা বেড়েছে বলেও সভায় উল্লেখ করা হয়। বাল্যবিয়ের কারণ হিসেবে অসাধু কাজীদের দৌরাত্মের পাশাপাশি অভিভাবকদের অসচেতনতা, মেয়ের পরিবারের আর্থিক অসঙ্গতি, সামাজিক নিরাপত্তার অভাবসহ নানাবিধ বিষয় উল্লেখ করা হয়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পপির নারী ও কিশোরীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ প্রকল্প (একাত্ত) কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রকল্পের আওতাভুক্ত কিশোরগঞ্জ জেলার সাতটি ইউনিয়নের বাল্যবিয়ের প্রবণতা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে রয়েছে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল, মারিয়া ও বিন্নাটি, হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ও পুমদী, পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডিপাশা ও সুখিয়া। এ সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নে বাল্যবিয়ের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ও পুমদী, পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডিপাশা ও সুখিয়া এবং কিশোরগঞ্জ সদরের মারিয়া ও বিন্নাটি ইউনিয়ন।
মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন পপির প্রকল্প সমন্বয়কারী মুহাম্মদ ফরিদুল আলম।
সভায় আরও জানানো হয়, গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত এক বছরে সাতটি ইউনিয়নে মোট ৪৯৬টি বাল্যবিয়ে সংঘটিত হয়েছে। এরমধ্যে ৪৭৩টি বিয়েই যৌতুকনির্ভর ছিল।
প্রকল্পের সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে ৭৫৫টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, এর অনেকগুলোই পরে স্থান পরিবর্তন করে গোপনে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় পপির ফাইন্যান্স এন্ড এডমিন অফিসার মো. জাকারিয়া, পপির সৌহার্দ্য প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার এ. এফ. এম আহাদ, একাত্ত প্রকল্পের কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার প্রজেক্ট অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, পাকুন্দিয়া উপজেলার প্রজেক্ট অফিসার মো. শাহীন হায়দার, হোসেনপুর উপজেলার প্রজেক্ট অফিসার সালমা পারভীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।