পাকুন্দিয়া ( কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা জাহান সেতুর জন্ম সনদপত্র অনুযায়ী তার বয়স এখন ১০৭ বছর পাঁচ মাস ২৩ দিন। এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে সেতুর পরিবার।
সেতু উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে পাকুন্দিয়া পৌরসভার সৈয়দগাঁও এলাকার মো. ওয়াসিমের মেয়ে। পৌরসভার মঙ্গলবাড়িয়া এলাকায় নানার বাড়িতে থেকে সে পড়ালেখা করে ।
তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সেতুর জন্ম ২০১৪ সালের ২৪ মে। সে অনুযায়ী তার ইপিআই টিকাদান কার্ডে জন্ম তারিখ লেখা আছে ২৪ মে ২০১৪। কিন্তু পৌরসভা থেকে যে সনদপত্র দেওয়া হয়েছে তাতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। পৌরসভার জন্ম সনদে সেতুর জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ২৪ মে ১৯১৪। সে হিসেবে জন্মের সনদপত্রে সেতুর বয়স ১০৭ বছর পাঁচ মাস ২৩ দিন।
এ বিষয়ে সেতুর নানা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রায় তিন মাস আগে উপবৃত্তির জন্য সেতু স্কুলে আবেদন করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেতুকে জন্মের সনদপত্র আনতে বলেন। তখন সেতু বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মাকে জানায়। পরে তিনি জন্ম সনদপত্র আনতে পৌরসভা কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে জন্মের সনদপত্র নিয়ে প্রধান শিক্ষককে দেওয়া হয়। তখন তিনি নিজেও জন্ম সনদটি ভালো করে দেখেননি বলে জানান। জন্ম সনদপত্রটি দেখে প্রধান শিক্ষক জানান, এতে সেতুর বয়স ১০০ বছর বেশি লেখা হয়েছে। বিষয়টি সংশোধনের জন্য পৌরসভা কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলেন প্রধান শিক্ষক। তখন তিনি পৌরসভায় গেলে জানানো হয়, বয়স সংশোধন করতে হলে আদালতে মামলা করতে হবে। পরে সংশোধনের জন্য পৌরসভায় আবেদন করতে হবে।
আমিনুল ইসলাম আরও জানান, এখন সেতুর জন্ম সনদ নিয়ে বিপাকে পড়েছি। আমি কোনোদিন আদালতের বারান্দায়ও যাইনি। এখন নাকি এটা পরিবর্তন করতে হলে আদালতে মামলা করতে হবে। আমি গরিব ও অভাবি মানুষ। এখন কী করে আমি আমার নাতির বয়স সংশোধন করবো?
মঙ্গলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে সেতুর ইপিআই টিকাদান কার্ডে তার যে জন্ম তারিখ লেখা আছে, ওই জন্ম তারিখ ঠিক রেখেই স্কুলে ভর্তি রেজিস্ট্রারে সেতুর জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া পৌরসভা কার্যালয়ের সচিব সৈয়দ শফিকুর রহমান জানান, আবেদন করার সময় হয়তো ভুলবশত ২০১৪ এর জায়গায় ১৯১৪ লেখা হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের ডকুমেন্টসগুলো আমি নিজে দেখেছি। আবেদনকারী মেয়ের মা ২৪ মে ১৯১৪ সাল লিখে আবেদন করেছেন। এতে করেই সমস্যা হয়েছে। সমস্যা তৈরি হলে তো একটা সমাধান আছে। পৌরসভা কার্যালয়ের সচিব সৈয়দ শফিকুর রহমানকে বলে দিয়েছি কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়।
তিনি আরও বলেন, সেতুর অভিভাবক বয়স সংশোধনের জন্য একটা আবেদন করলে ডকুমেন্টসগুলো দেখে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে দেওয়া হবে।