মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) থেকে: ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আগামী ৩১ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে আওয়ামী লীগ।
পাকুন্দিয়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই রয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ না নিলেও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ৯টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন ১৭ জন। এরমধ্যে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চারজন, চরফরাদী ইউনিয়নে একজন, এগারসিন্দুর ইউনিয়নে একজন, চণ্ডিপাশা ইউনিয়নে দুজন, নারান্দী ইউনিয়নে তিনজন, পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নে একজন, বুরুদিয়া ইউনিয়নে দুজন, সুখিয়া ইউনিয়নে একজন ও হোসেন্দী ইউনিয়নে দুজন। বিদ্রোহীদের কারণে উত্তেজনাও রয়েছে। ইতোমধ্যে একাধিক ইউনিয়নে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন কোন কোন প্রার্থী। অপরদিকে ৮টি ইউনিয়নে বিএনপির ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে জানা গেছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন জানান, ইউনিয়ন পরিষদে দলগতভাবে বিএনপি নির্বাচন করছেনা। কিন্তু দলের যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের বিষয়ে কেন্দ্রিয়ভাবে কোন বিধিনিষেধ নেই, আবার উৎসাহও দেওয়া হচ্ছেনা।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে পাকু্ন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট সোহরাব উদ্দিন জানান, বিদ্রোহীদের জন্য আমরা অস্বস্তিতে রয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা প্রার্থী হয়েছেন, কেন্দ্রিয় নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিদ্রোহীদের পক্ষে সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের ইন্দন রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ বলেন, আমরা যারা জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় পদে আছি, প্রত্যেকেরই পছন্দের প্রার্থী থাকে। তবে দলীয় প্রতীক যারা পায়, তাদের পক্ষেই আমাদের অবস্থান থাকা উচিত। নির্বাচনের সময় এমন অভিযোগ থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন প্রার্থীর পক্ষে কিভাবে ইন্দন দিচ্ছি, সেটা স্পষ্ট করে সোহরাব সাহেব বলতে পারবেননা।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ছোটখাট যেসব অভিযোগ এসেছে, সেসব বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ৫৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩৫১ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থী ও ১১৬ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে লড়ছেন। প্রথমবারের মতো এখানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।
ইভিএমে ভোট প্রদানের বিষয়ে ভোটারদেরকে প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্যে আগামী শনিবার (২৯ জানুয়ারি) পাকুন্দিয়ার ৯৩ টি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।