ইটনা (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের ইটনায় সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাত ৯ টার দিকে মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন মো.রেনু মিয়া (৬০),শাকিল ভূইয়া (৩৫),মো.মহসিন মিয়া (৩৫), জাহাঙ্গীর ভূইয়া (৪০) ও লালন ভূইয়া (৩৪)। তারা সবাই লাইমপাশা গ্রামের ভূইয়া বাড়ির বাসিন্দা। এছাড়াও আহত অন্যদেরকে গ্রামের বিভিন্ন ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহত শাকিল ভূইয়ার ছোট ভাই বায়েজীদ জানান, রাত ৯ টার দিকে তার ভাতিজা লালন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে মৃগা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল হাসান দুলালের বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় চেয়ারম্যানের অফিসের ভিতর থেকে কয়েকজন লোক বের হয়ে লালনকে ধরে নিয়ে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তাকে মারধর করে ঠোঁট ফাটিয়ে দেয়। পরে সে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায়। পরে রামদা, বল্লম, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে তাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় আরও কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে লালন আর রেনু মিয়াকে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও শাকিল, মহসিন ও জাহাঙ্গীরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যদেরকে বিভিন্ন ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শাকিলের বড় ভাই মাসুদ রানা বলেন, আমরা গত নির্বাচনে দুলাল চেয়ারম্যানের নির্বাচন করেছিলাম। কিন্তু এবার আমরা তার নির্বাচন না করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দারুল ইসলামের নির্বাচন করেছি। তিনি জয়ী হয়েছেন। দুলাল চেয়ারম্যান নির্বাচনে পরাজিত হয়েই দুদিন যাবৎ আমাদের লোকজনকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি–ধমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় অতর্কিত হামলা করে তারা।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দারুল ইসলাম বলেন, দুলাল চেয়ারম্যান পরাজিত হয়ে তার বাড়ির পাশে বসবাস করা আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন। কোন প্রকার কারণ ছাড়াই শুধুমাত্র আমার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার ফলে তাদের ওপর এই হামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল হাসান দুলাল হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কারও বাড়িতে গিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেনি। ছোট ছোট বাচ্চাদের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে দারুল ইসলামের লোকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে ডাকা ডাকি করতে শুরু করলে আমার লোকেরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়। এ সময় হালকা একটু মারামারি হয়েছে। এতে কয়েকজন সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। কিন্তু তারা সেটা ব্যাপক আকারে প্রচার দিচ্ছেন। আমার লোকজনও আহত হয়েছেন।
ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, মারামারি হয়েছে শুনেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। কোন পক্ষের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।