ঢাকাশনিবার , ৯ এপ্রিল ২০২২
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইতিহাস ঐতিহ্য
  5. করোনা আপডেট
  6. ক্যাম্পাস
  7. ক্রীড়া জগৎ
  8. জাতীয়
  9. তথ্য প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. নারী অধিকার
  12. প্রবাস সংবাদ
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. সম্পাদকীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইটনায় ফসল হারিয়ে কৃষকের আহাজারি

প্রতিবেদক
-
এপ্রিল ৯, ২০২২ ৪:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

হাওর প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ইটনায় প্লাবিত তিন হাওরে এখন কৃষকের আহাজারি চলছে। নিজেরা কী খাবে, আর গবাদি পশুদের কী খাওয়াবে-এ নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে ইটনা উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের আফাইন্নের হাওর, নালুয়া আর চাচুয়ার হাওর। আর মাত্র কদিন পরই যে ফসল ঘরে তোলার কথা ছিল, কৃষকের চোখের সামনে সে ফসল তলিয়ে গেছে পানিতে। সারা বছরের শ্রমঘাম জড়ানো জমির ফসলের সাথে ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্নও। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি এলাকার কৃষকেরা।  কেউ কেউ আধা পাকা ধান কোন রকমে কেটে আনতে পারলেও সেটা গবাদি পশুর খাবার হিসেবে কিছুদিন চলবে।

ধনপুর ইউনিয়নের দীনেশপুর গ্রামের কৃষক শনি লাল দাসের ছয় সদস্যের পরিবার। একমাত্র সম্বল কৃষি জমি। নিজেদের খোরাক রেখে বাকিটুকু বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। চড়া সুদে ঋণ এনে নালুয়া হাওরে জমি করেছিলেন একর।  উজানের ঢলে সব হারিয়ে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে তার মাথায়। তিনি জানান, চড়া সুদে ঋণ এনে জমিতে খরচ করেছেন। আশা ছিল বৈশাখে ফসল তুলে ঋণ শোধ করবেন। কিন্তু এখন ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা, কী করে নিজে চলবেন, সে চিন্তায় ঘুম নেই তার।

একই ইউনিয়নের চাচুয়া গ্রামের কৃষক ভূপেন্দ্র চন্দ্র দাস চাচুয়া হাওরে জমি করেছিলেন একর।  নিজের কোন জমি নেই তার। অন্যের জমি টাকার বিনিময়ে পত্তন এনে চাষ করেছিলেন। বাড়িতে পাঁচটি গরু ছাড়া সম্বল বলতে আর কিছুই নেই তার। তিনি বলেন, চড়া সুদে ঋণ এনে অন্যের জমি পত্তন এনে চাষ করে খুব একটা লাভবান হওয়া যায় না। নিজের খোরাক আর বর্ষাকালে গরু বাছুরের খাবারের জন্য খড়টুকু ছাড়া আর কোন লাভ নাই কৃষি কাজে। ফসল তলিয়ে যাওয়ায় এখন গরুগুলো বিক্রি করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে জানালেন তিনি। 

একই গ্রামের কিষাণী সুভাসী রানী দাস জানান, পানির নিচে সব তলিয়ে গেছে দেখে গরুর ব্যাপারীরাও সুযোগ বুঝে দাম কমিয়ে বলে। যে গরুর দাম হওয়ার কথা ৫০ হাজার টাকা, তারা সেটা ৩০ হাজারের ওপরে দামই বলে না।

ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার দাস বলেন, পুরো ইউনিয়নে কৃষকদের আহাজারি চলছে। অনেকের ঘরে চুলা জ্বলে না। এমন অনেক পরিবার আছে যারা ইতিমধ্যেই বাড়িঘর ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, বেঁচে থাকার তাগিদে ছাড়া তাদের আর বিকল্প কোন পথ নেই। 

ধনপুর ইউনিয়নের তিনটি হাওর প্লাবিত হয়ে দেড় শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উজ্জ্বল সাহা।

আপনার মন্তব্য করুন