এম এ হান্নান, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ): ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কামাররা। দিন–রাত টুং–টাং শব্দে নানা রকমের জিনিস তৈরি করছেন তারা। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তাদের ব্যস্ততাও বেড়েছে।
কোরবানির পশু কাটাছেঁড়া করার জন্যে ব্যবহৃত–অব্যবহৃত দা–বটি ও ছোরা শান দেওয়ার জন্যও কামারদের কাছে নিয়ে আসছেন কেউ কেউ। আবার অনেকেই এসব ক্রয় করতে ছুটছেন কামারপট্টিতে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। কামারদের দোকানগুলোতে অন্য সময়ের চেয়ে মৌসুমী কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে। কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ায় চাহিদামত জিনিস তৈরি করতে পারছেন তারা। শুক্রবার সকালে পুলেরঘাট, পাকুন্দিয়া, মির্জাপুর, আশুতিয়া পুরাতন বাজারের কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, কামাররা যে যার মত করে দা, বঁটি, ছোরা, চাপাতি, কুড়ালসহ কোরবানির মাংস কাটার জিনিস তৈরি করছেন।
তবে ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার দা, বঁটি, ছোরা, চাপাতির দাম অনেকটা বেশি। কয়লা, লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার এসবের দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছেন বলে কামররা জানিয়েছেন। তারা জানান, কয়লা, লোহাসহ উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে এসব জিনিসের দামও বেড়েছে। নতুন একটি ছোট দা ১০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, এমনকি ৪০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। মাঝারী দা ৪৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকায়, এমনকি ৮০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। কুড়াল ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারের ছোরা ৩৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, বিভিন্ন আকারের চাকু ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, বটি ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকাররা।
পুলেরঘাট বাজারের কামারপট্টিতে কোরবানির মাংস কাটার উপকরণ ক্রয় করতে আসা জামাল মিয়া জানান, এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে যন্ত্রপাতির দাম অনেকটা বেশি। তিনি বলেন, গত বছর বড় সাইজের যে দা ৪০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন, এবার সেই দার দাম ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা চাচ্ছেন কর্মকাররা। ক্রেতারা জানান, ঈদুল আযহা তথা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বটি, দা, বড় ছোরা ও কুড়াল, চাপাতিসহ মাংস কাটার উপকরণের দাম বেড়েছে।
কর্মকার বিধান রায় জানান, এ পেশায় আমাদের এখন আর আগের মতো চাহিদা নেই। সারা বছরই আমাদের অলস সময় কাটাতে হয়। তবে ঈদুল আযহা এলে এ পেশার মানুষদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়।