সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন: “সন্তান অসুস্থ হলে মা বাবার কষ্টের সীমা থাকেনা। ছোট খাটো কোনো অসুখ নয়। হার্টের সমস্যা, হার্নিয়া, খিচুনি, ব্লাড ইনফেকশন, শ্বাসকষ্ট, হরমোনজনিত নানা সমস্যা। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের টাকা আমাদের আশার আলো দেখিয়েছে।”
কথাগুলো বলছিলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সৈয়দগাঁও গ্রামের কৃষক মো. জসিমের স্ত্রী আসমা আক্তার। তার দুই সন্তান। বড় ছেলে ওয়াসিম আক্রাম (১৫) ও ছোট ছেলে দীন ইসলাম (১৫ মাস)। ১৫ মাস বয়সী ছোট ছেলেটি উপরোক্ত জটিল রোগে ভুগছে। জন্মের পর থেকেই তার এসব রোগ ধরা পড়ে।
আসমা জানান, সহায় সম্পদ যা ছিল সবকিছু বিক্রি করে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ওর চিকিৎসায় খরচ করেন। পাশাপাশি আড়াই লাখ টাকা ঋণও করেন। কিন্তু সুস্থতার দেখা মেলেনি। এক পর্যায়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পান। চিকিৎসায় শেষ হয়ে যায় এ টাকাও। পরিচিত দুজনের পরামর্শে তিনি যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া নতুন বাজার এলাকার কৃষিবিদ মসিউর রহমান হুমায়ুনের সঙ্গে। আসমার দুঃখের কথা শুনে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয় হুমায়ুনের। হুমায়ুনের প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মিলে দুই লাখ টাকা। এ টাকায় এখন দেশে চিকিৎসা হচ্ছে শিশুটির।
আসমা আরও জানান, ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে সাড়ে চার লাখ টাকা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের টাকাসহ সব মিলিয়ে তার হাতে আছে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা। বাকি টাকা জোগারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কান্না জড়িত কণ্ঠে আসমা বলেন, ছেলের চিকিৎসার জন্য সবকিছু শেষ করলাম। পঞ্চাশ পয়সা করে সাহায্যের জন্য মানুষের কাছে হাত পেতেছি। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা আমাকে আশার আলো দেখিয়েছে। আর কিছু সংগ্রহ হলে খুব শিগগির ভারতে গিয়ে ছেলের চিকিৎসা করাবেন বলে জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন এলাকার কলেজ ছাত্রী মহিমা আক্তার জানান, তার বাবা
ক্যান্সার আক্রান্ত। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মসিউর রহমান হুমায়ুনের কাছে গেলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দুই লাখ টাকার চেক নিয়ে নিজেই তার বাড়িতে গিয়ে দিয়ে যান।
শুধু তারাই নন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের টাকায় আরও অনেকেরই চিকিৎসা চলছে। সহায়তাপ্রাপ্ত অনেকেই জানান, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল নামে যে তহবিল আছে এবং এখান থেকে সহায়তা পাওয়া যায়, সেটা তারা জানতেনই না। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মসিউর রহমান হুমায়ুন অসহায় মানুষকে এ তহবিলের সন্ধান দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মসিউর রহমান হুমায়ুন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই উদার মনের মানুষ। তার কাছে হাত পেতে কেউ খালি হাতে ফিরে যায়নি। তার ত্রাণ তহবিল গরিব দুখি মানুষের জন্য সবসময় খোলা। কিশোরগঞ্জে আইনজীবী, সংবাদকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী, কৃষক, শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এ সহায়তা পেয়েছেন।
সারাদেশের অসংখ্য মানুষ এ সহায়তা পেয়েছে এবং এটা অব্যাহত থাকবে। সহায়তা পাওয়া মানুষের মাঝে যে তৃপ্তির হাসি দেখা যায়, সেটা স্বর্গীয় বলে মন্তব্য করেন হুমায়ুন।