নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার মিলেছে ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা।
আজ শনিবার সকালে ৮ টি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় ২০ বস্তা টাকা। দিনভর গণনা করে পাওয়া গেছে এ টাকা। পাশাপাশি মিলেছে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, স্বর্ণ ও রোপার অলংকার। ৩ মাস ৬ দিনে দানবাক্সে জমা পড়েছে এগুলো।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক এটিএম ফরহাদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি এ যাবতকালের রেকর্ড পরিমাণ দান বলে জানান তিনি।
এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ১ অক্টোবর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৩ মাস ১ দিনে এই দানবাক্সগুলোতে জমা পড়েছিল ১৫ বস্তা টাকা। তখন গণনা শেষে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ২৮ হাজার ৪১৫ টাকা। সেবারও বৈদেশিক মুদ্রাসহ সোনা ও রুপা ছিল।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল পৌনে ৯টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে বাক্সের টাকা বস্তায় ভরা হয়। গণনা শেষে সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় হিসাব প্রকাশ করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টাকার বস্তাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। গণনা চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এতে অংশ নেন ১১২ জন মাদ্রাসা ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ ও মসজিদ কমিটির ৩৪ জন সদস্য।
গণনার কাজে নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার দেশের বাড়ি টাঙ্গাইল। গণনা দেখে খুব ভালো লাগছে। টাকার অনেক ছবি তুলে বাড়িতে পাঠিয়েছি।
গণনায় অংশ নেয়া হেফজখানা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবদুর রহিম ও মো. সাজিদ হোসাইন জানান, দানবাক্স খোলার পর থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী এখানে অবস্থান করেন।
পাগলা মসজিদের নৈশপ্রহরী মকবুল হোসেন দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে। তিনি বলেন, শুধু মুসলিম না, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে এসে দান করেন। টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলও দান করেন কেউ কেউ।
গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহাকরী কমিশনার অহনা জিন্নাত, শেখ জাবের আহমেদ, সুলতানা রাজিয়া, সহকারী কমিশনার মোছা. নাবিলা ফেরদৌস, মো. মাহমুদুল হাসান, রওশন কবীর, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে।