আদালত প্রতিবেদক: দীর্ঘ সাত বছর পর কিশোরগঞ্জের চাঞ্চল্যকর শোলাকিয়া জঙ্গি হামলা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
সাক্ষ্য গ্রহণের সময় মামলার পাঁচ আসামির সকলকেই আদালতে উপস্থিত করা হয়। এ সময় বাদীসহ ১৭ জন সাক্ষির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মামলার পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তারা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধি ওরফে সুভাস ওরফে জাহিদ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, মো. সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল ওরফে নুরুল্লাহ, জাহেদুল হক ওরফে তানিম এবং আনোয়ার।
শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল–২ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) এডভোকেট আবু নাসের মো. ফারুক সঞ্জু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের অদূরে আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে পুলিশের চেকপোস্টে ঈদুল ফিতরের নামাজ শুরুর আগ ম‚হুর্তে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা পুলিশ সদস্য আনসারুল হক ও জহিরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে পুলিশের গুলিতে আবির রহমান নামে এক জঙ্গি নিহত হয়। এছাড়া নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন স্থানীয় গৃহবধ‚ ঝর্না রাণী ভৌমিক।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা তৎকালিন পাকুন্দিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দিন বাদি হয়ে জঙ্গি শফিউল ইসলাম ও জাহিদুল হক তানিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা জঙ্গিদেরকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মোট ২৪ জন আসামির মধ্যে বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধে ১৯ জন মারা যান। মারা যাওয়া আসামিদের বাদ দিয়ে এ ঘটনায় পুলিশ ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে পাঁচজনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করে। কিন্তু সকল আসামিকে এক সাথে আদালতে হাজির করতে না পারায় দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হচ্ছিলনা বলে জানান আদালতের পিপি।
সরকারি কৌশলী (পিপি) এডভোকেট আবু নাসের মো. ফারুক সঞ্জু বলেন, ঘটনার সাত বছর পরে হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ায় দ্রæত মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হবে। সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৪ অক্টোবর।