করিমগঞ্জ (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মো. সেলিম (৩৯) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পাথরটিও উদ্ধার উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে গাজীপুর জেলার টঙ্গী পূর্ব থানার পাগাড় এলাকার ফকির মার্কেট থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
গ্রেফতার সেলিম কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের পাটধা কাঁঠালিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে করিমগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী এ তথ্য জানান। গ্রেফতার সেলিম এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বলেও জানান ওসি।
তিনি আরও জানান, রবিবার রাতে নিকলী উপজেলার মজলিশপুর এলাকা থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার খয়রত এলাকায় যাওয়ার কথা বলে শরীফের অটোরিকশাটি ভাড়া নেন সেলিমসহ অজ্ঞাত আরও তিন/চারজন। পরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সড়কের করিমগঞ্জ–নিকলী সংযোগ (নলীন) সেতুর কাছে এসে শরীফকে জোরপূর্বক সেতুর নিচে নামিয়ে মাথায় পাথর চাপা দিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত শরীফের পিতা মতিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ এরপরেই হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান নামে পুলিশ। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পাথরটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সড়কের করিমগঞ্জ–নিকলী সংযোগ (নলীন) সেতুর নিচ থেকে শরীফের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের ইন্দাচুল্লী গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে।
নিহত শরীফের বড় ভাই মোহন মিয়া জানান, তাদের সাত ভাইয়ের মধ্যে শরীফ সবার ছোট এবং অত্যন্ত আদরের ছিল। আগে নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় তার সাথে ইটভাটায় কাজ করতো শরীফ। গত ১৫ দিন আগে সে বাড়িতে চলে আসে। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ঋণ করে একটি অটোরিকশা কিনেছিল। রবিবার দুপুরে পুরাতন একটি অটোরিকশা কিনে বিকাল পর্যন্ত মেরামত করে। সন্ধ্যার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ ছিল। সোমবার সকালে মানুষের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে করিমগঞ্জ–নিকলী সংযোগ সেতুর নিচে গিয়ে তার লাশ পাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার করায় তিনি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
শরীফের ভগ্নিপতি আক্কাস আলী জানান, রবিবার দুপুর ২ টার দিকে আমি নিজে শরীফকে সাথে নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিফপুর থেকে ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি পুরাতন অটোরিকশা কিনে দেই। বিকালে করিমগঞ্জ উপজেলার খয়রত বাজারে অটোরিকশাটি মেরামত করে শরীফ। সন্ধ্যায় ভাড়ার জন্য বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।