ঢাকাশুক্রবার , ৩০ জুন ২০২৩
  1. – 99
  2. 1Win Brasil
  3. 1win Yüklə Android Apk Və Ios App 2023 əvəzsiz Indir Plant-based Products – 688
  4. 1xBet Azerbaycan Qeydiyyat Mobi AZ Yukle Elaqe Nomresi Benchmark Commercial Lending 157 – 233
  5. 1xBet giriş, güzgü 1 xBet Azərbaycanda rəsmi sayt – 673
  6. 1xbet Mobi Cihazlarınız Üzrə Mobil Tətbiqi Android Os Cihazlar üçün 1xbet Mobile Tətbiq – 186
  7. 1xbet Morocco
  8. casino
  9. Kazino Online Casino Official Site, Big Bonuses, Site Mirror, Casino Entrance, Payment Acceptance, Big Jackpot – 626
  10. mostbet apk
  11. mostbet az 90
  12. Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan Lap Yaxşı Bukmeyker Formal Saytı – 331
  13. mostbet azerbaijan
  14. mostbet kirish
  15. Mostbet Mobil Tətbiq: Azərbaycandan Olan Oyunçular üçün Icmal 2023 – 598
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আজ ঐতিহাসিক হুল দিবস

প্রতিবেদক
-
জুন ৩০, ২০২৩ ৪:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিউজ একুশে ডেস্ক : ৩০ জুন ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিবস, যা ঐতিহাসিক সাঁওতাল হুল দিবস বা সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস নামে পরিচিত। সিঁদু-কানু-ফুলমনি’র সংগ্রামের ইতিহাস।

শোষণ, বঞ্চনা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে মহান সিঁদু-কানুসহ আদিবাসীদের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ শুধু ভারতবর্ষের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। সাঁওতাল বিদ্রোহ ইংরেজদের বিরুদ্ধে হলেও এটা ছিল মূলত উচ্চবর্ণীয় জমিদার, জোতদার, অসৎ ব্যবসায়ী ও সুদখোর মহাজনদের বিরুদ্ধে।

বাংলা, বিহার ও উড়িশ্যার সবচেয়ে বড় জনজাতি ছিলেন সাঁওতালরা। পতিত, অনাবাদী জমি কঠোর শ্রম দিয়ে সাঁওতালরা আবাদি ও উর্বর করে তোলে। ফলে এদের হাতে ছিল নিজস্ব জমি- জায়গা। দীর্ঘদিন ধরে সাঁওতালরা এই অঞ্চলে সুখে শান্তিতে নিজেদের সমাজ ও সংস্কৃতিকে নিয়ে বসবাস করছিল। কিন্তু ১৭৯৩ সালে “চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত”র ফলে সাঁওতালদের জমি তথাকথিত উচ্চবর্ণের জমিদার, জোতদারদের হাতে চলে যায়।

ফলে সহজ সরল সাঁওতালদের উপর শুরু হয় উচ্চবর্ণের জমিদার, জোতদারদের শোষণ ও অত্যাচার। অবশেষে শান্তিপ্রিয় সাঁওতালরা জমিচ্যুত ও ভূমিচ্যুত হয়ে বিহারের হাজারিবাগ, মানভূম, ছোটনাগপুর, পালামৌ ও উড়িশ্যা থেকে বাংলা ও বিহারের সীমান্তবর্তী পার্বত্য এলাকা “দামিন-ই-কোহি” অঞ্চলে চলে আসে এবং বিহারের ভাগলপুর থেকে বাংলার বীরভূম পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে সাঁওতালরা বসবাস শুরু করে। তারা পুনরায় অমানবিক পরিশ্রমে জঙ্গল পরিস্কার করে বসতি স্থাপন করে এবং পতিত জমি চাষাবাদ করে সোনার ফসল ফলিয়ে নতুন জীবন শুরু করে। কিন্তু চির বঞ্চিত, চির অবহেলিত সাঁওতালদের জীবনে এই সুখ বেশীদিন স্থায়ী হল না। তাদের ভাগ্যাকাশে আবার নেমে এলো উচ্চবর্ণীয় জমিদার, জোতদার, সুদখোর মহাজনদের অত্যাচার, শোষণের ভয়ঙ্কর কালো মেঘ।

এই নতুন অঞ্চলে আবার জমিদারেরা সাঁওতালদের উপর উচ্চহারে খাজনা চাপায়। খাজনা না দিতে পেরে সাঁওতালরা সুদখোর মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে সর্বশান্ত হতে থাকে। ধীরে ধীরে একদিকে যেমন জমির মালিকানা হারাতে থাকে, অপরদিকে উচ্চবর্ণীয় জমিদার ও তার কর্মচারী, জোতদার, মহাজনদের দ্বারা সাঁওতাল নারীদের ইজ্জত-সম্মানের উপর এবং আদিবাসী সংস্কৃতির উপর আঘাত নেমে আসে। এ সকল কারণে আদিবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু এবার সরলপ্রাণ সাঁওতালরা এই অঞ্চল ছেড়ে চলে না গিয়ে উচ্চবর্ণীয় জমিদার মহাজনদের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে রুখে দাঁড়ালো। আর সমগ্র বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলো মহান বীর সংগ্রামী সিঁদু-কানু দুই ভাইসহ চাঁদ মুর্মু, ভৈরব মুর্মু, ডোমন মাঝি প্রমুখ। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন ‘হুল’ বা ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করা হল। এই বিদ্রোহে সাঁওতালদের সঙ্গে সমগ্র আদিবাসী সমাজসহ বিস্তীর্ণ এলাকার কামার, কুমার, তাঁতি, ছুঁতার, দরিদ্র মুসলমানসহ নিন্মবর্ণের প্রান্তিক কৃষকেরা যোগদান করে।

এই বিদ্রোহে সিঁদু-কানুর নেতৃত্বে আদিবাসীদের কাছে প্রথমে তিনবার জমিদার, জোতদাররা চূড়ান্ত পরাজিত হয়। পরাজিত হয়ে অবশেষে তারা আদিবাসীদের বিরুদ্ধে ইংরেজদের ভুল বুঝিয়ে ও মিথ্যা কথা বলে তাদের পক্ষে এনে ইংরেজদের দিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে যুদ্ধ করায়। তা সত্বেও জমিদার, জোতদার ও ইংরেজদের যৌথ বাহিনীর মেজর “বরোজ” সিঁদু-কানুর নেতৃত্বে আদিবাসীদের কাছে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়। অবশেষে এর পরের যুদ্ধে বিশাল ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে আদিবাসীরা পরাজিত হয়। কিন্তু এই জয় তারা সহজে পায়নি। দীর্ঘ এক বছর পাঁচ মাসের এই যুদ্ধে ইংরেজদের হাতি-ঘোড়া সমন্বিত, আধুনিক কামান, বন্দুক সুসজ্জিত বিশাল বাহিনীর কাছে সাঁওতালরা পরাজিত হয়। তবে এটা মূলত যুদ্ধ ছিল না, ছিল হিংসাত্বক হত্যালীলা। ঐ সকল বিস্তীর্ণ আদিবাসী অঞ্চলের পথ-ঘাট রক্তে ভিজে গিয়েছিল, যেখানে সেখানে আদিবাসী নর-নারী-শিশুর লাশ পড়ে ছিল। পুড়ানো বা কবর দেওয়ারও কেউ ছিল না। ১৭৫টি আদিবাসী গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। প্রায় ৩৩ হাজার আদিবাসী সাঁওতাল এই যুদ্ধে নিহত হয়। সিঁদুকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং কানু, চাঁদ ও ভৈরব মুর্মুসহ অন্যদের ফাঁসি দেওয়া হয়।

সাঁওতাল বিদ্রোহে আদিবাসী নারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এবং পুরুষদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সমানে যুদ্ধ করে। নেতৃত্ব দেয় সিঁদু কানুর বোন ফুলমনি। এই বিদ্রোহে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অত্যাচার নেমে আসে সাঁওতাল নারীদের উপর। প্রায় ১২ হাজার মহিলা ও যুবতী ধর্ষিতা হয় এবং তিন হাজার নারী ধর্ষণসহ খুন হয়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা, সরোজিনী নাইডুদের পাশাপাশি ফুলমনিদের মতো বিরাঙ্গনা নারিদের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে।

পৃথিবীর ইতিহাস খুঁজলেও এমন নৃশংস, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কথা জানা যায় না। এটি যুদ্ধ ছিল না, ছিল হত্যালীলা।

ভারতের প্রথম স্বাধীনতার আন্দোলন ও গণসংগ্রামের নাম সাঁওতাল বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহ ছিল আদিবাসী ভূমিপুত্রদের “জমি রক্ষার” আন্দোলন বা “কৃষক আন্দোলন”।

২০১০ সাল থেকে জাতিসংঘের ১৮৪টি দেশ ‘হুল দিবস’ সম্মানের সাথে পালন করা হয়।

আপনার মন্তব্য করুন

error: কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!