সিঙ্গাপুর থেকে ইয়াছিন আরাফাত: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। বিশ্বের একটি পরিচ্ছন্ন সিটি হিসেবে সিঙ্গাপুরের খ্যাতি রয়েছে। এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে প্রবাসী সকলেই পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে থাকেন।
সিঙ্গাপুরের রাস্তাঘাট, সরকারি কিংবা বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার কোথাও ময়লা-আবর্জনার চিহ্নও দেখা যায়না। হাসপাতাল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মত সবকিছুই পরিপাটি। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিনে দুইবার করে পরিস্কার করা হয়। এখানে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়টি সকলেই চেষ্টা করে থাকেন।
সিঙ্গাপুরের ডরমেটরিগুলোতে অবস্থানকারী সকলের নামের তালিকা প্রতিটি রুমে টানানো থাকে। পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন একজন করে রুম পরিস্কার করে থাকেন। পরিস্কার রাখার জন্য আবাসিক রুম থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, শপিংমলসহ সকল স্থানে রাবিশ বিন বা ঝুড়ি রাখা আছে। কেউ ইচ্ছা করলেই যেখানে সেখানে কোন কিছু ফেলতে পারেনা। এমনকি সাধারণ একটি সিগারেটের অংশবিশেষ কিংবা ব্যবহৃত কাগজের টুকরা পর্যন্ত রাস্তায় ফেলতে পারেনা। শুধু তাই নয়, ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া প্রকাশ্যে কেউ ধূমপান করতে পারেনা। এসবের জন্য রয়েছে যথাযথ আইন এবং আইনের প্রয়োগও হয় যথারীতি।
সিঙ্গাপুরে সড়কগুলো প্রতিদিন পরিস্কার করা হয়। পানি ও জীবণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা হয়। এখানকার প্রতিটি কোম্পানী নিজ উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতার কাজটি করে থাকে। পাবলিক টয়লেটগুলো দিনে দুইবার করে পরিস্কার করা হয়। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কারণে সিঙ্গাপুরে মশা-মাছির কোন উপদ্রব নেই।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর এলাকার আওলাদ হোসেন বলেন, তিনি প্রায় ১৪ বছর ধরে সিঙ্গাপুরে একটি শিপইয়ার্ডে কর্মরত আছেন। তিনি বুকিতবাথুক আকাশিয়া লজ কেপেল হাউজে থাকেন। প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রসহ থাকার রুম দিনে দুইবার করে পরিস্কার করা হয় বলে জানান তিনি।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নানশ্রী (চকেরবাড়ি) গ্রামের সাদেক জানান, তিনি সিঙ্গাপুরের সাউথ তোয়াজে সিটিপিলে প্রায় ৮বছর ধরে থাকেন। সর্বত্রই পরিচ্ছন্নতার ছোঁয়া দেখা যায় বলে তিনি জানান। নিজেদের রুমগুলো প্রতিদিন একবার করে এবং মাসে একবার সকলে মিলে পরিস্কার করা হয়।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের প্রাণের বাংলাদেশটাও যদি এমন হত!