নিজস্ব প্রতিবেদক: শত শত কর্মী সমর্থক নিয়ে মিছিল করে আজ বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু। কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা) কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করে তিনি।
মনোনয়নপত্র দাখিলের কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই উপজেলা জাতীয় পার্টি কার্যালয় এবং ইউএনও কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিলেন কয়েকশ নেতাকর্মী। মোটরসাইকেলের বহর নিয়েও হাজির হন অনেকে। দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলা জাতীয় পার্টি কার্যালয় থেকে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে মিছিল সহকারে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান মুজিবুল হক চুন্নু।
মনোনয়নপত্র দাখিলের পর নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের বিষয়ে এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি ভালো করে জানেন এবং আমিও জানি যে, ১৮ তারিখের আগে পর্যন্ত ভোট চাওয়া বা এ সমস্ত কর্মকাণ্ডগুলি করা নির্বাচনী আচরণবিধির লংঘন, কোনো সন্দেহ নেই। তিনি সেটা চাননি উল্লেখ করে বলেন, আমি চাইনি আমার কোনো লোক আসুক। যে লোকগুলো এসেছে, তারা জোর করে এসেছে। তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করেছি, তোমরা কেন এসেছো, তারা বললো, গতকালকে (২৯ নভেম্বর) নৌকার প্রার্থী যদি কয়েকশ মোটরসাইকেল নিয়ে দুই উপজেলায় শোডাউন করতে পারে, তাহলে আমরা হেঁটে আসবো, এটা কি অন্যায় হয়ে যাবে? তিনি এটা সমর্থন করেননা মন্তব্য করে বলেন, আমার লোকজন এসেছে, আমি এটা সমর্থন করিনা এবং গতকালকে যারা নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন স্টার্ট করলেন সেটার প্রতিবাদ জানাই। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা যেন এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। সেটা তার নিজের লোকের বিরুদ্ধে গেলেও কোনো আপত্তি থাকবেনা বলে জানান তিনি।
নির্বাচনে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নিজে একাধিকবার ইউএসও অ্যাম্বাসেডর, ইউকে অ্যাম্বাসেডর, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। আলাপ করে আমি নিজে বুঝতে পারলাম তাদের সবার মূল দাবিটা হলো, এদেশে সকল দলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু, ভালো ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এ দাবিটা তো এদেশের জনগণেরও দাবি। দাবিটা তো অন্যায় কিছুনা। এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, যদিও আমি মনে করি বাইরের দেশ আমাদের বিষয়ে দাবি করার কোনো দরকার নেই, কিন্তু বড় দুটি দলই এ দাবিটুকু করার জন্য পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে।
এরশাদ সরকারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৯৯০ সনের ৬ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বে একটি জোট, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি জোট এবং বামদলের নেতৃত্বে আরেকটি জোট, এই তিনজোট বলেছিল এরশাদ সাহেব পদত্যাগ করলে এদেশে গণতন্ত্র কায়েম হবে, মানুষ ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, টাকা পাচার হবেনা, দুর্নীতি হবেনা, বেকার সমস্যার সমাধান হবে, একটা সুশাসন হবে। কিন্তু দুঃখজনক গত ৩৩ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুটি দলই একটি বিষয়ে অন্তত নির্বাচনটা কিভাবে হবে, কি পদ্ধতিতে হবে সেই বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে পারেনি। কাজেই এখন মানুষ বলছে যে, এরচেয়ে এরশাদের শাসন অনেক ভালো ছিল, সুন্দর ছিল, সুশাসন ছিল। বড় দুটি দলের এক্ষেত্রে ব্যর্থতা যে, ৩৩ বছরেও তারা নির্বাচনের একটা সঠিক পদ্ধতি বের করতে পারলোনা। আমরা চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন, ভালো নির্বাচন।
নির্বাচন সুষ্ঠু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, নির্বাচন ভালো হবে, ভালো পরিবেশ হবে। যে পরিবেশে ভোটাররা এসে ভোট দিতে পারবে। তাদের আশ্বাসে আমরা বিশ্বাস করেছি। আগামি দিনগুলোতে দেখবো এটার বাস্তবে প্রতিফলন কতটুকু।