নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি জমির মাটি কেটে সরকারি খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছে প্রভাবশালী একটি মহল। এতে জলাবদ্ধতায় কৃষকের কয়েক হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা হাওরে খাল ভরাট করে কৃষি জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বালিয়াপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী কুতুবউদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর করিমগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল আমিন কবির ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াপাড়া গ্রাম থেকে সিএস রেকর্ডভূক্ত খালটি বালিখলা বাজারের পাশ দিয়ে ধনু নদীতে মিশেছে। এই খাল দিয়ে বারঘরিয়া, নিয়ামতপুর ও সুতারপাড়া এলাকার পানি ধনু নদীতে প্রবাহিত হয়ে আসছে। খালটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছে প্রভাবশালী মহল।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, ধনু নদী থেকে বালিখলা গণ শৌচাগার সংলগ্ন ১৮ ফুট উচ্চতার প্রায় তিনশত মিটার রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। জরিমানা করার পরদিন থেকে কৃষি জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে দ্বিগুণ উদ্যমে রাস্তা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে তারা।
খাকশ্রী গ্রামের কৃষক আরজু মিয়া জানান, এই খাল দিয়ে বর্ষার পানি আসে এবং বর্ষা পরবর্তী হাওরের পানি এই খাল দিয়েই নিস্কাশন হয়। তাছাড়া বালিয়াপাড়া, পুরান চামটা গ্রামের কৃষকরা এই খালের পানি দিয়ে জমিতে সেচ দিয়ে থাকেন। খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মিত হলে কৃষকরা বিপাকে পড়বে।
একই গ্রামের কৃষক নুরুল হক জানান, খালটি ভরাট করা হলে সামান্য বৃষ্টিতেই বোরো জমি পানিতে তলিয়ে যাবে। এতে হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হবে।
খাকশ্রী গ্রামের তোতা মিয়ার ৬৬ শতক জমি রয়েছে বালিখলা খালের পাড়ে। তাকে না জানিয়েই এক শতক জমির মাটি কেটে রাস্তা বানানো হচ্ছে। প্রতিবাদ করায় তাকে এখন হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযুক্ত কুতুব উদ্দিন বলেন, নিজের জমিতেই রাস্তা করছি। অনুমোদন না আনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছে। খালের মুখে কালভার্ট করে পানি চলাচল স্বাভাবিক রাখা হবে বলে জানান তিনি।
করিমগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল আমিন কবির জানান, কৃষি জমির মাটি কেটে রাস্তা নিমার্ণের ঘটনায় অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। খাল ভরাট করে রাস্তা নিমার্ণের উদ্যোগ নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খালটি ভরাট করে রাস্তা নিমার্ণ করা হলে জলাবদ্ধতায় কৃষকের কয়েক হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পর্যটকবাহী নৌকাও আসতে পারবে না। এমনকি হাওরের সৌর্ন্দযও বিনষ্ট হবে বলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন।
