নিজস্ব প্রতিবেদক: ইজারাজুলুম ও নির্যাতনের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে দুদিন ধরে মাছ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেন। এর ফলে কিশোরগঞ্জ শহরের তিনটি বাজারে দুদিন ধরে মাছ বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, মাছের প্রতি ডালা দৈনিক পাঁচ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও ইজারাদার ২০০ টাকা দাবি করছেন। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে ইজারাদারের লোকজনের সাথে মাছ ব্যবসায়ীদের তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইজারাদারের লোকজন মাছ ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা করে। এতে ৭/৮জন ব্যবসায়ী আহত হন। এর প্রতিবাদে বিকালে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর ফলে বৃহস্পতিবার থেকেই শহরের বড় বাজার, পুরানথানা ও কাচারী বাজারের তিনটি মাছ মহালেই মাছ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। বাজারে মাছ না পেয়ে ক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে রমজান মাসে ক্রেতাদেরকে সীমাহীন কষ্টভোগ করতে হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ শহর মাছ বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মুকছেদ মিয়া জানান, আমরা শুক্রবার জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি মেয়র সাহেবকে বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মাছ বিক্রি বন্ধ থাকবে।
বড়বাজার মাছ মহালের ইজারাদার মো. আরজু মিয়া বলেন, এই মাছ মহালটি ভ্যাটসহ ২৫ লাখ টাকায় আমরা ইজারা নিয়েছি। ১ বৈশাখ থেকে টোল আদায় করার কথা। সে অনুযায়ী টোল তুলতে গেলে ব্যবসায়ীরা ডালাপ্রতি পাঁচ টাকার বেশি ইজারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ডালাপ্রতি পাঁচ টাকা করে টোল আদায় করলে বছরে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা আদায় হবে। অথচ ইজারা ডাক হয়েছে ভ্যাটসহ ২৫ লাখ টাকায়। এ নিয়ে তাদের সাথে আমাদের লোকজনের তর্কবিতর্ক হয়। তিনি আরও বলেন, গত বছর তারাই ইজারা নিয়ে বিনা রশিদে ১৫০–২০০ টাকা আদায় করেছেন। কিন্তু এবার দরপত্রের মাধ্যমে বাজার না পেয়ে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন বলে তিনি দাবি করেন।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো.পারভেজ মিয়া বলেন, সিডিউল অনুযায়ী যে রেটে টাকা তোলার কথা, সে রেটেই টাকা তুলতে হবে। এ বিষয়ে দুপক্ষকে রবিবার পৌরসভা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। সেখানেই মীমাংসা হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, মাছ ব্যবসায়ীরা শুক্রবার তার কাছে গিয়ে অভিযোগ করেছেন। তিনি মেয়রকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন বলে জানান। নির্ধারিত রেটের বাইরে টাকা নিলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।