নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জিনারী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম এবার পাঁচ কাঠা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। পুরো জমিতেই মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কী করবেন, কোন কিছু ভেবে পাচ্ছেননা। তিনি জানান, উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে কয়েকদিন ফোন দিলেও তিনি আসেননি। হঠাৎ আসলেও ইউনিয়ন পরিষদে এবং তার পরিচিত কৃষকের সাথে কথা বলে চলে যান। মাজরা পোকার আক্রমণের পর কৃষি কর্মকর্তা একদিনের জন্যও আসেননি বলে অভিযোগ তার।
হোসেনপুর উপজেলার জিনারী ইউনিয়নে এবার মাজরা পোকার আক্রমণ বেশি বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে না পেরে কোন কোন কৃষক কাঁচা ধানের গাছ কেটে নিচ্ছেন গরুর খাবারের জন্য। শুধু কৃষক সাইফুল ইসলামেরই নয়, তার প্রতিবেশি রিটন ও তার সহোদর ভাই গফুরের ১০ কাঠা জমিতেও পোকায় ধরেছে বলে জানান তিনি। এ অবস্থায় তারা কাঁচা ধানগাছ কেটে নিচ্ছেন।
গাবরগাঁও গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া জানান, তিনি সাত কাঠা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। পোকায় ধরেছে পুরো জমিতেই। পোকার আক্রমণে ধানগাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তারও একই অভিযোগ, কৃষি কর্মকর্তাকে খবর দিলেও তিনি আসেননি।
জিনারী ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিলসাদ জানান, একজনের বাড়িতে গেলে অন্যরা অভিযোগ করেন কেন যাইনি। সবার বাড়িতে একদিনে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি থাকেন কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া এলাকায়। প্রতি রবিবার উপজেলা অফিসে কাজ থাকে এবং অন্যদিনগুলোতে এলাকায় যান বলে দাবি করেন তিনি।
চর হাজীপুর ব্লøকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রনি জানান, তিনি থাকেন পার্শ্ববর্তী গফরগাঁওয়ে। দুই মাস হলো এখানে যোগদান করেছেন। মোটর সাইকেল কিনতে পারেননি বলে নিয়মিত এলাকায় যাওয়া হয়না। মাজরা পোকার আক্রমণের বিষয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ফোন পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শনিবারদিন (১৫ অক্টোবর) একজন কৃষক অটোরিকশার ব্যবস্থা করায় গাবরগাঁও গ্রামে যান। সেখানে খুব কম পরিমাণ জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে বলে দেখেছেন তিনি। মাজরা পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কৃষকদেরকে কীটনাশক স্প্রে এবং জমিতে পার্চিং করার (গাছের ডাল পুঁতে রাখা) পরামর্শ দিয়েছেন।
হোসেনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইমরুল কায়েস জানান, হোসেনপুরে ৮ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমিতে এবার রোপা আমন চাষ হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র তিন হেক্টর জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। পুরো উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র জিনারী এলাকাতেই মাজরা পোকার আক্রামণ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এলাকায় গিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।