আদালত প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাত মাস বয়সী শিশুকে হত্যার দায়ে দাদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ সোমবার বেলা পৌনে ৩ টার দিকে আসামির উপস্থিতিতে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সায়েদুর রহমান খান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত কল্পনা বেগম (৪০) কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শম্ভুপুর বড়কান্দা এলাকার মেরাজ মিয়ার স্ত্রী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিরবণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২১ জুলাই দুপুরে ৭ মাস বয়সী ছেলে নুরুন্নবীকে বসতঘরে ঘুম পাড়িয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যান মা শিল্পী বেগম। গোসল শেষে ঘরে ফিরে দেখেন ছেলে বিছানায় নেই। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে আসামিদের বাড়িতে খুঁজতে যান তিনি। গিয়ে দেখেন তারাও বাড়িতে নেই। তিনদিন পর ২৪ জুলাই সকালে প্রতিবেশী আতর মিয়ার বাড়ির দক্ষিণ পাশে ময়লার স্তুপের ওপর শিশুটির মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পরদিন ২৫ জুলাই দাফন শেষে শিশুটির মা জানতে পারেন তাদের চাচি শ্বাশুড়ি কল্পনা বেগম ও তার ছেলে নাহিদ মিয়া বিক্রির উদ্দেশ্যে শিশুটিকে চুরি করেছিল। কিন্তুু বিক্রি করতে না পেরে শিশুটিকে হত্যা করে ময়লার স্তুপে ফেলে দেন। ২৬ জুলাই ভৈরব থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। ২০১৮ সালের ১৪ জানুয়ারি শিশুটির মা শিল্পী বেগম বাদী হয়ে কল্পনা বেগম ও তার ছেলে নাহিদ মিয়াকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি আসামি কল্পনা বেগমকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ভৈরব থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৬ জুন কল্পনা বেগমকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক সোমবার বিকালে এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট লুৎফর রাশিদ রানা। তিনি জানান, এ রায়ে আসামি ন্যায়বিচার পায়নি। আসামি উচ্চ আদালতে গেলে ন্যায়বিচার পাবেন বলে মনে করেন তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু সাঈদ মো. ইমাম জানান, এ রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট। রায় দ্রুত কার্যকর চান তারা।